বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুমাস ধরে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) সংক্রান্ত মামলায় শ্রীঘরে রয়েছেন প্রাক্তন শাসকদলীয় মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জন্মলগ্নের হেভিওয়েট নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়(Partha Chatterjee)। কেটে গেছে অনেক মাস, তবে এখনো জেলের ঘানি টেনেই দিন কাটছে তার। বহুবার জামিনের আবেদন চেয়েও মেলেনি কোনো সুরাহা। অন্যদিকে, গ্রেফতার হওয়ার পরই তড়িঘড়ি তাকে দল থেকে বিতাড়িত করেছে শাসক শিবির । সাথেই দলের সমস্ত পদ থেকে মুছে দিয়েছে তার নাম।
দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI) এর দাবিতে কখনও হয়ে উঠছেন মূল অভিযুক্ত, আবার কখনও ষড়যন্ত্রকারীর আখ্যা পাচ্ছেন তিনি। গতকাল আলিপুর সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা হয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবিরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিং ও অশোক সাহাকে। সেখানেই শুনানি পর্বের শেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এক ভিন্ন রূপ দেখল গোটা আদালত৷
আদালত চত্বরে এদিন বিচারকের দিকে দুহাত জোড় করেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিচারক যখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে জানতে চান তার কিছু বলার আছে কি না ? সেই প্রশ্নের উত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন “সকলে সোশ্যাল জাস্টিসের কথা বলছে৷ এখানে সামাজিকভাবে আমার চরিত্র হননের কাজ চলছে। কেউ আর মন্ত্রী হতে চাইবে না৷ ওখানে ইডি-সিবিআইকে বসিয়ে দিন। আমি মন্ত্রী , প্রতিদিন এক কথা শুনতে শুনতে কান ঝালপালা হয়ে যাচ্ছে। আমি ন্যায় বিচার চাই।” একদিন তৃণমূলের এই প্রভাবশালী দাপুটে নেতা আজ হাত জোর করছেন ন্যায় বিচারের আশায়। এ যেন এক অন্য পার্থকে চাক্ষুস করল আদালত।
এদিন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়া সকলেই আদালতে জামিনের আবেদন করেন। অন্যদিকে শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের আইনজীবীর তরফে জামিনের বিরোধিতা করা হয়৷ তার সপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে সিবিআই তরফে বলা হয়, যারা গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেল হেফাজত আছেন তাদের জামিন দিলে তথ্য নষ্ট হতে পারে, তারা যথেষ্ট প্রভাবশালী এবং ষড়যন্ত্রকারী। প্রায় দেড় ঘণ্টা শুনানি চলার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ সাত জনকে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আলিপুরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত।
প্রসঙ্গত, এদিন তাকে আদালতে পেশ করার আগে সাংবাদিকরা তাকে শুভেন্দু অধিকারীর ডিসেম্বর ডেডলাইন প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করলে তার উত্তরে তিনি হুঙ্কার করে বলেন, “তৃণমূলের কেউ ক্ষতি করতে পারবে না।” তবে এই প্রথমবার নয়, এর আগেও ধৃত অবস্থায় বহুবার পার্থর মুখে শোনা গিয়েছে দলের গুণগান।