চাষাবাদ করে উপার্জন করা টাকা দান স্কুলে, মেদিনীপুরের কৃষক দম্পতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সমাজের অগ্রগতির জন্য যেটি সবার আগে প্রয়োজন সেটি হল শিক্ষা (Education)। কারণ, সঠিক শিক্ষাই নির্ধারণ করে জাতির ভবিষ্যৎ। পাশাপাশি, শিক্ষার ওপর ভর করেই দাঁড়িয়ে থাকে সমাজ এবং সভ্যতা। এমতাবস্থায়, সকলের কাছে শিক্ষা পৌঁছে দিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যত উন্নত হবে ততই ছড়িয়ে পড়বে শিক্ষার ব্যাপ্তি। আর সেই লক্ষ্যেই এবার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) চন্দ্রকোনা থানা এলাকার পরমানন্দপুর গ্রামের এক কৃষক দম্পতি।

এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ওই কৃষক দম্পতি অর্থাৎ রাখহরি ঘোষ ও ছবিরাণী ঘোষ তাঁদের কঠোর পরিশ্রম দ্বারা সঞ্চিত অর্থের কিছুটা অংশ দু’টি স্কুলকে তুলে দিয়েছেন। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই ওই দম্পতির এহেন মহতী কর্মকান্ডকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পড়াশুনোর প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে রাখহরিবাবুর।

   

পরিবারের প্রত্যেককে পড়াশুনো শেখানোর পাশাপাশি এখনও সময় পেলে নিজেও পড়াশুনো করেন এই প্রবীণ মানুষটি। এমতাবস্থায়, তাঁর ইচ্ছে ছিল যে তিনি তাঁর কৃষিকাজের মাধ্যমেই উপার্জন করা অর্থের একটা অংশ শিক্ষার উন্নতির জন্য ব্যয় করবেন। পাশাপাশি, রাখহরিবাবুর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন তাঁর স্ত্রী ছবিরাণী দেবীও। আর সেই কারণেই স্থানীয় পঞ্চায়েত এলাকার অন্তর্গত লক্ষ্মীপুর হাইস্কুলে ১ লক্ষ টাকা ও গ্রামের পাশে অবস্থিত মৌলা হাইস্কুলে ৫০ হাজার টাকা দান করেন তাঁরা।

এমতাবস্থায়, বহুদিনের এই ইচ্ছেপূরণ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি রাখহরি বাবু। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন আমার বয়স হয়ে গিয়েছে। তবে, শিক্ষা ছাড়া মানুষ এবং সমাজের উন্নতি হয় না। তাই ইচ্ছে ছিল আমি এবং আমার স্ত্রী দু’জনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজেদের উপার্জিত যৎসামান্য অর্থ দান করে দেবো। সেই কাজ করতে পেরে সত্যিই খুব খুশি।”

whatsapp image 2023 02 09 at 6.26.02 pm

এদিকে, ওই প্রবীণ দম্পতির এহেন পদক্ষেপ উদ্বুদ্ধ করেছে ছাত্রছাত্রীদেরকেও। এই প্রসঙ্গে এক ছাত্র জানিয়েছে, “এই বয়সে এসে ওনারা আমাদের স্কুলের সকল ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। শিক্ষা ছাড়া দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এহেন চিন্তাভাবনা যেন সবার মধ্যে বজায় থাকে।” এছাড়াও, ওই দু’টি স্কুলের কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে, রাখহরি বাবুর অনুদানের টাকায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনোর সুবিধার্থে বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ করা হবে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর