WBCS এ নজরকারা সাফল্য মালদার কাগজ-কুড়ানির ছেলের, দখল করলেন পঞ্চম স্থান

বাংলাহান্ট ডেস্ক : মালদার (Malda) হতদরিদ্র দিনমজুর মহবুবুল শেখ সকাল থেকে প্লাস্টিক কুড়োন, তারপর তা বিক্রি করেন। চরম দারিদ্রতার মধ্যেও ছেলে নিসাদ খালেক ছিল তার ভরসা। মানুষের মতো মানুষ হবে, ভালো কাজ করবে এই আশাই করেছিলেন মহবুবুল। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে সেই ছেলে হয়ে গেল ডেপুটি পুলিশ সুপার।

ছেলের এই সাফল্যের রীতিমতো বাঁধভাঙ্গা আনন্দ নেমে এসেছে হতদরিদ্র পরিবারে। WBPS পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন নিসাদ। ডেপুটি পুলিশ সুপার (DSP) হিসেবে তিনি যোগ দিতে চলেছেন কাজে। নিসাদের বাড়ি মালদার কালিয়াচক থানার বামনগ্রামে। এই জায়গা একসময় কুখ্যাত ছিল দুর্গম গ্রাম বলে।

কিন্তু সময়ের সাথে এই গ্রামে পৌঁছেছে উন্নয়নের আলো। নিসাদের বাবা কোনরকমে প্লাস্টিক কুড়িয়ে সংসার চালান। বাবা মহবুবুল শেখ, মা উনজেলা বিবি সহ তিন ভাইবোনকে নিয়ে সংসার নিসাদের। মহবুবুল শেখ দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে চালিয়ে গিয়েছেন সন্তানদের পড়াশোনা।

আল আমিন মিশনে পড়াশুনা নিসাদের। এরপর তিনি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ পান মিশনের সাহায্যে। তিনি ২০২০ সালের WBCS এর লিখিত পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। গ্রুপ বি তে তার নাম আসে পাঁচ নম্বরে। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন পুলিশ সার্ভিসে যোগ দেওয়ার।

নিসাদ বলেছেন, “গ্রামের অবস্থা ছোট থেকেই দেখছি। সিভিল সার্ভিসের স্বপ্ন দেখেছি ছোট থেকেই। WBCS দিয়েছিলাম ২০১৯ সালে। ইন্টারভিউ রাউন্ডে গিয়ে অসফল হই। তার পরের বছর অবশ্য পাশ করি। তরুণ প্রজন্মের উচিত প্রশাসনের মেরুদন্ড সোজা করতে এগিয়ে আসা। আমি চেষ্টা করব সাধারণ মানুষ যেন সরকারি পরিষেবা সহজে পান।”

Nisad

নিসাদের মা বলেছেন, “অত্যন্ত অভাবের সংসার ছিল আমাদের। কিন্তু ছেলের সাফল্যে সব দুঃখ কষ্ট ভুলে গিয়েছি। ছোটবেলা থেকে ও পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল। ছেলের জন্য যে এত সুখ ছিল তা আমি ভাবতে পারিনি। আমরা গর্বিত।”


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর