জেনে নিন টায়ারের ওপর লেখা নম্বরের অর্থ! খরচ কমার পাশাপাশি বেড়ে যাবে নিরাপত্তাও

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রাচীনকাল থেকেই চাকার ব্যবহার নিয়মিতভাবে করে আসছে মানুষ। যার ফলে আরও গতিশীল হয়েছে জীবনযাত্রা। এদিকে, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে একাধিক বিবর্তন ঘটেছে চাকার। এমন পরিস্থিতিতে, বর্তমান সময়ে চাকার নানান প্রকারভেদ পরিলক্ষিত হয়। সর্বোপরি, এখন টায়ারের (Tyres) ব্যবহারও সর্বত্র দেখা যায়। যদিও, টায়ারে থাকা নম্বরগুলি ভালোভাবে পরিলক্ষিত করি না আমরা। অথচ, ওই নম্বরের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে অবাক করা সব তথ্য। বর্তমান প্ৰতিবেদনে সেই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল

প্রতিটি টায়ারের উপর একটি কোড থাকে: আপনি যদি কোনো একটি টায়ারকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন তাহলে সেখানে একটি কোড দেখতে পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি টায়ারের উপর “P” লেখা থাকে তবে সেটি যাত্রীবাহী গাড়ির জন্য তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, “LT” হল হালকা যানবাহনের জন্য। পাশাপাশি, যদি টায়ারটি বড় ট্রেলার অথবা বিশেষ কোনো ট্রেলারের জন্য তৈরি করা হয়, সেক্ষেত্রে তার উপর “ST” লেখা থাকবে। এছাড়াও, অস্থায়ী টায়ারের ক্ষেত্রে লেখা থাকে “T”। এবারে মনে করুন কোনো টায়ারে লেখা আছে, “220/r16/85″। এমতাবস্থায়, এখানে “r16” বলতে রিমের আকারকে বোঝানো হচ্ছে। যেটি হল ১৬ ইঞ্চি।

   

টায়ারের চওড়ার পরিমাপ: দ্রুতগতির গাড়ির ক্ষেত্রে টায়ার অনেকটাই চওড়া হয়। এই প্রসঙ্গে আমরা একটি ছবি তুলে ধরছি। যেটিতে “W” দ্বারা টায়ারের চওড়ার পরিমাপের বিষয়টা দেখানো হয়েছে। মনে করুন, কোনো টায়ারে ১৯৫/৫৫ লেখা আছে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে টায়ারের যে অংশটি রাস্তার সংস্পর্শে আসবে সেটি হল ১৯৫ মিমি। পাশাপাশি, ছবিতে থাকা সেকশন হাইট (H) আবার মোট চওড়া অংশের ৫৫ শতাংশ হয়। যেটি হল ১০৭.২৫ শতাংশ। উল্লেখ্য যে, টায়ারের চওড়া এবং এর ধাতব রিমের মধ্যে ব্যবধান যত কম হবে তত ভালো। সেজন্য রেসিং কারের টায়ার অনেকটাই চওড়া হয়।

main qimg 47f870aa2390b4f02d1bb1d4f0285012 lq

টায়ারের প্রকারভেদ (R): সাধারণ টায়ার রাবার দিয়ে তৈরি হয়। যদিও, টায়ারের কিছু প্রকারভেদও রয়েছে। যেমন রেডিয়াল এবং ক্রস প্লাই। এগুলি নির্ভর করে টায়ারের ভিতরে থাকা নাইলন এবং স্টিলের স্তরগুলি কিভাবে লাগানো হয়েছে তার উপরে। এছাড়াও, টায়ারের প্লাই সম্পর্কেও তথ্য দেওয়া থাকে। এগুলি গাড়ির মডেল অনুযায়ী তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে চারটি টায়ারের প্লাই যেন একই রকম হয়।

কত ওজন নিতে পারে (87): এই বিষয়টি জানার জন্য আপনি টায়ারে ৮৭-৮৫ এর মতো সংখ্যা দেখতে পাবেন। যা লোড ইনডেক্স নির্দেশ করে। এগুলি থেকে বোঝা যায় যে, টায়ার কতটা ওজন নিতে পারে। এখানে ৮৭ মানে হল একটি টায়ার সর্বোচ্চ ৫৪৫ কেজি ওজন নিতে পারে। অর্থাৎ, চারটি টায়ার সর্বোচ্চ ২,১৮০ কেজি ওজন নিতে পারবে।

main qimg 1afcf5b3001bd6968bba79960969befb lq

গতি সম্পর্কেও জানা যাবে (V): স্পিড ইনডেক্সের মাধ্যমে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়। এটি “V”-এর জন্য হয় ২৪০ কিমি/ঘন্টা। পাশাপাশি, H-এর জন্য ২১০ কিমি/ঘন্টা। আরেকটি বিষয় হল, টেম্পারেচার গেজ এবং টায়ার প্রেশারের প্রসঙ্গেও নজর রাখতে হয়। ভারতের মতো দেশে যেখানে অধিকাংশ জায়গায় তাপমাত্রা বেশি থাকে, সেখানে রাস্তাগুলিও খুব গরম হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায়, অনেকেই ইম্পোর্টেড টায়ার গাড়িতে লাগাতে চান। সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ ইম্পোর্টেড টায়ার শীতল এলাকার মত করে তৈরি করা হয়। তাই উচ্চ তাপমাত্রায় সেই টায়ারগুলি ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এমন পরিস্থিতিতে টায়ারের আকার অনুযায়ী টায়ারের প্রেশার মার্ক দেওয়া থাকে। সেই অনুযায়ী, গাড়ির টায়ারের প্রেশার রয়েছে কি না তা লক্ষ্য রাখতে হয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর