বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মৃত্যুপুরি! গতকাল ওড়িশার (Odisha) বালেশ্বরের (Balasore) কাছে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express) ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। পাশাপাশি আহতের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়েছে। চারিদিকে মৃত্যু মিছিল। কেউ কোনোক্রমে ফিরে এসেছেন, কেউ পাড়ি দিয়েছেন চির নিদ্রার দেশে।
চোখে মুখে একরাশ আতঙ্ক ও রক্ত মাখা জামা নিয়ে অবশেষে ফিরলেন অভিশপ্ত যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের (Yesvantpur Express) বি ৪ ও বি ৫ এসি থ্রি টিয়ার কোচের সহায়ক। প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে ধন্যবাদ জানালেন চালক ও ঈশ্বরকে। দীর্ঘক্ষণ দুর্ঘটনায় আটকে থাকার পর আজ ১.৩৫ মিনিটে হাওড়া ফিরল ডাউন যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। থ্রি টায়ার ইকনমি কোচের কাঁচ ভেঙে তছনছ।
প্রাণ হাতে করে ট্রেন থেকে নামলেন যাত্রীরা। হাওড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমেই যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের কোচ সহায়ক প্রবীর দাস জানান, ‘আমি অবশ্যই আতঙ্কিত। আমি ভাবতে পারিনি এখানে থেকে ফিরব।”
ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা মনে করে তিনি বলেন, “১ সেকেন্ডের মধ্যে চালক আমার জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ড্রাইভার সাহেবকে ধন্যবাদ। এত গতিতে উনি ওই জায়গা থেকে আমাদেরকে বের করে নিয়ে এসেছেন, যদি আর এক সেকেন্ড দেরি হতো আমাদের ট্রেনটা পালটি খেত’।
তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রীদের সাহায্য করা তো আমাদের কর্তব্য। এক যাত্রী পরের স্টেশনে নামবেন বলে তার ব্যাগ নিয়ে আমি যাচ্ছিলাম। সেই মুহুর্তে ধাক্কা খাওয়ায় ওই যাত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে আমার চোট লাগে’।
প্রসঙ্গত, বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস, ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি দুর্ঘটনায় কবলে পড়ে। একই লাইনে ছিল হাওড়াগামী যশবন্তপুর এক্সপ্রেসও। লাইনচ্যুত হয়ে যায় এক্সপ্রেস ট্রেন করমণ্ডলের ১৫ টি বগি। মুহূর্তে তছনছ হয়ে যায় সব। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের দুটি বগিও লাইনচ্যুত হয়।
একই সাথে এক দুর্ঘটনার কবলে তিনটি ট্রেন। তাই আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে গোটা চিত্র। হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস, বেঙ্গালুরু-হাওড়া যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস, মালগাড়ি। একইসঙ্গে তিন তিনটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কথা এ দেশের মানুষ আগে কোনও দিন শুনেছেন কিনা, সেই সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা নেই কারোরই।