বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে ঋণের ভারে নুয়ে থাকা দরিদ্র পাকিস্তান (Pakistan) আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালেও স্বস্তি পাবেনা। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ১২৫ বিলিয়ন ডলারের গন্ডি অতিক্রম করেছে। এদিকে, ২০২৩ সালের মার্চ নাগাদ মোট বৈদেশিক পাবলিক ঋণ পৌঁছে গিয়েছে ৮৫ বিলিয়ন ডলারে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমীক্ষার রিপোর্টে এই বড় তথ্য উঠে এসেছে।
সেখানে আরও বলা হয়েছে যে, পাকিস্তান সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ এখন ৫৮.৬ ট্রিলিয়নে পৌঁছেছে। পাশাপাশি, এটাও বলা হয়েছে যে, আগামী ২০২৪ সালেও পাকিস্তান ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাবে না। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ১৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এমনকি, যদি পাকিস্তান কোনোভাবে আইএমএফ প্রোগ্রাম পুনরায় চালু করে, সেক্ষেত্রে ২০২৪ সালেও সেদেশকে খুব বড় আকারের ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
ইতিমধ্যে, পাকিস্তান সরকার আইন প্রণেতাদের বিবেচনামূলক বাজেটে ৬৬ শতাংশের বিশাল বৃদ্ধির অনুমোদন করেছে। যা চলতি অর্থবছরের জন্য রেকর্ড ১১৬ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপিতে পৌঁছে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে যে, এই সিদ্ধান্তটি “বেপরোয়া” রাজস্ব নীতি অব্যাহত রেখেছে। যা পাকিস্তানকে ডিফল্টের কাছাকাছি ঠেলে দিচ্ছে।
ফেডারেল বাজেটে ঘাটতি ৬.৪ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপি: বর্তমানে পরিস্থিতি দেখে এটাই মনে হচ্ছে যে, সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) কর্মসূচির পুনরুজ্জীবনকে অবহেলা করছে। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের সাথে যে সমঝোতা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করে অর্থব্যয় করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জন্য ফেডারেল বাজেটের ঘাটতি এখন প্রায় ৬.৪ ট্রিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি বা মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) ৮.১ শতাংশ অনুমান করা হয়েছে। যা ৪.৫ ট্রিলিয়ন পাকিস্তানি টাকার লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দেড় গুণ।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, সরকার চলতি অর্থবছরে সাংসদদের স্কিমগুলির জন্য প্রাথমিকভাবে ৭০ বিলিয়ন পাকিস্তানি টাকা বরাদ্দ করেছিল। যা ১৩ টি জোটের দলগুলির অতিরিক্ত তহবিলের প্রতিযোগিতামূলক দাবির কারণে অপর্যাপ্ত প্রমাণিত হয়েছে। সিদ্ধান্তটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন পাকিস্তানের ঋণখেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, কিছু আর্থিক সাহায্যের জন্য তাদের দেশীয় ব্যাঙ্ক এবং আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের সাথে ঋণ পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনার জরুরি প্রয়োজনও রয়েছে।
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রত্যেক সদস্যকে ৫০ কোটি টাকা: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলেছে যে, একটি সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করার পরিবর্তে, সরকার এমন প্রকল্পগুলিতে অর্থ বরাদ্দ করছে যেখানে সঠিক যাচাইয়ের অভাবে অপব্যবহারের সম্ভাবনাই বেশি। জোট সরকার আগে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রতিটি সদস্যের জন্য ৫০ কোটি পাকিস্তানি রুপি বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যা বর্তমানে জোটের অংশীদারদের সন্তুষ্ট করার প্রয়াসে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।