বাংলাহান্ট ডেস্কঃ পেটের দায়ে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়াই হল কাল। রাজ্যে শিল্পের আকাল! একই হাল উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ির (Dhupguri)। জেলায় সে ভাবে শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসার এখনও ঘটেনি। তাই বহু শ্রমিকই পেট চালাতে পাড়ি দেয় ভিন রাজ্যে। কাজের খোঁজে বাড়ি ছেড়ে আজ থেকে প্রায় ৫ বছর আগে গোয়া গিয়েছিল ধূপগুড়ির বলরাম সেন (৪০)। তবে রবিবার বাড়িতে ফিরল তার নিথর দেহ। আর এর পরের ঘটনা আরও মর্মান্তিক।
ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর (Migrant Workers Death) ঘটনায় দিশেহারা পরিবার। হতদরিদ্র পরিবার ভিন রাজ্য থেকে মৃতদেহ কিভাবে নিয়ে আসবে তার কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছিল না। তবে খবর পেয়ে জলপাইগুড়ির বিজেপি সংসদ ডক্টর জয়ন্ত কুমার রায় নিজ উদ্যোগে গোয়া থেকে প্রথমে বাগডোগরা এয়ারপোর্ট পর্যন্ত বিমানে ও পরে সড়কপথে ধূপগুড়ি ব্লকের বারঘড়িয়া অঞ্চলের বিদ্যাশ্রম এলাকার বাড়িতে দেহ পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করেন।
জানা গিয়েছে, অসুস্থ হয়ে মারা যান বলরাম। শেষ এক বছর আগে এসেছিলেন ধুপগুড়ির বাড়িতে। মৃত বলরাম সেন এর বাড়িতে স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে। একজনের বয়স দুই বছর ও অন্যজন মাত্র ৮ মাস। দুজনেই দুধের শিশু। কিভাবে পরিবার বলরামের মৃতদেহ ভিটে বাড়িতে নিয়ে আসবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছিল না।
আরও পড়ুন: হঠাৎই মৌসুমী অক্ষরেখার অবস্থান বদল! বিকেলের পর দামাল বৃষ্টি এই ৪ জেলায়, জারি অ্যালার্ট
এরপরে তিনি বিজেপি পঞ্চায়েত নরেশচন্দ্র রায়ের সাথে যোগাযোগ করেন, নরেশ বাবু সাংসদ ডক্টর জয়ন্ত কুমার রায় কে সমস্ত ঘটনা বলেন এবং তিনি দেহ আনবার ব্যবস্থা করে দেন। তবে দেহ ধূপগুড়ির বাড়িতে নিয়ে আসলেও তা শ্বশানে কিভাবে নিয়ে যাওয়া হবে সেই নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: ১০০ মিটার দূরে ছিটকে পড়ল দেহ, চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মাংসপিণ্ড! দত্তপুকুর কাণ্ডে কতজনের মৃত্যু?
মৃত বলরামের প্রতিবেশীদের অভিযোগ, পৌরসভার কাছে শববাহী গাড়ি চাওয়া হলেও কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। প্রতিবেশীদের আরও অভিযোগ তৃণমূলের পার্টি অফিসে পর্যন্ত গিয়ে পরিবারের থেকে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল কিন্তু কোন সাহায্য মেলেনি।
এরপর একপ্রকার বাধ্য হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা মৃত দেহ ঘাড়ে করে বয়ে নিয়ে যান প্রতিবেশীরাই। তাদের কথা বহু আরজি করার পরও শববাহী গাড়ি না দেওয়ায় এভাবেই তিন কিলোমিটার হেঁটে তারাই মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছে শ্মশানে। সেই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে চোখে জল সকলের।