বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত ২৩ অগাস্ট চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)-এর মাধ্যমে সফলভাবে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছিল ভারত (India)। আর তার সাথে তৈরি হয় ইতিহাসও। যার রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশবাসী। এই সাফল্যের উৎসবে মুখরিত গোটা দেশ। এদিকে, চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের পর একাধিক বিষয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসছে। জানা গিয়েছে গুগল ট্রেন্ডস অনুসারে, ভারতে “স্পেস” শব্দটি ইন্টারনেট সার্চে ২৩ অগাস্ট সন্ধ্যে ৬ টা বেজে ৩০ মিনিটে (চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদে অবতরণের ২৬ মিনিট পরে) শীর্ষে ছিল।
এদিকে, “স্পেস”-এর পাশাপাশি “স্পেস জবস”, “ISRO জবস” এবং “স্পেস কেরিয়ার”-এর মতো সার্চ কিওয়ার্ডগুলিও ২৩ থেকে ২৪ অগাস্ট নাগাদ প্রায় শীর্ষে পৌঁছেছিল। এর মানে হল, চন্দ্রযান-৩ হাজার হাজার ভারতীয়দের (যাঁদের অধিকাংশ পড়ুয়া) স্পেস ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার গড়ার বিষয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ISRO একটি বড় তথ্যও সামনে এনেছে। জানা গিয়েছে, ISRO-র কার্যক্রম এবং এর সাথে যুক্ত প্রাইভেট সেক্টরের কার্যক্রমের কারণে দেশে হাজার হাজার চাকরি তৈরি হয়েছে।
অর্থাৎ, এটা স্পষ্ট যে চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যের কারণে ভারতীয় প্রাইভেট স্পেস সেক্টরে আরও কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে বেশ কয়েকটি কোম্পানি এবং ৫০০ টিরও বেশি স্মল মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস রয়েছে যেগুলি ডিফেন্স এবং অ্যারোস্পেস সংক্রান্ত ব্যবসায় নিয়োজিত রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ISRO বর্তমানে আরও একাধিক স্পেস মিশনে কাজ করছে বা কাজ শুরু করতে চলেছে। এমতাবস্থায়, এই সেক্টরে আরও কর্মসংস্থান আসতে চলেছে।
আরও পড়ুন: বসে নেই ISRO! চন্দ্রযান-৩-এর পর এবার মহাকাশে যাবে মহিলা রোবট, কোন মাসে সম্পন্ন হবে ট্রায়াল?
চাকরির প্রসঙ্গে বড় বিবৃতি দিয়েছে ISRO: এই প্রসঙ্গে ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, স্পেস ইন্ডাস্ট্রি ভারতে কতগুলি চাকরি প্রদান করেছে তার কোনো আপডেটেড রিপোর্ট নেই। তবে, ISRO সম্প্রতি একটি নোটে বলেছে যে, তাদের ক্রমাগত কার্যকলাপ এবং মিশনের কারণে, ৫০০ টিরও বেশি MSME, PSU এবং বেশ কয়েকটি বড় বেসরকারি উদ্যোগের সাথে একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করা হয়েছে। যার জেরে ভারত মহাকাশ কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ISRO তার নোটে আরও বলেছে যে, এই মহাকাশ সংক্রান্ত কার্যক্রমে এহেন শিল্পের অংশগ্রহণ দেশে প্রায় ৪৫,০০০ চাকরি তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, ডিফেন্স প্রোডাকশন, টেলিকম, মেটিরিয়াল, কেমিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো একাধিক সেক্টর এর ফলে উপকৃত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাবা নিরাপত্তারক্ষী, মা বিক্রি করতেন চা! ছেলে ISRO-র বিজ্ঞানী হয়ে চাঁদে পাঠালেন চন্দ্রযান
এইসব শিল্পে প্রচুর চাকরি রয়েছে: এই প্রসঙ্গে IIT যোধপুরের অধ্যাপক অরুণ কুমার ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের রিপোর্টে বলেছেন যে ISRO ছাড়াও, নতুন যুগের স্টার্ট-আপগুলির আগমনের কারণে স্পেস ইন্ডাস্ট্রিতে বহু চাকরি রয়েছে। তিনি বলেন যে, প্রাইভেট সেক্টরগুলি স্যাটেলাইট নির্মাণের পাশাপাশি স্পেস সফ্টওয়্যারের মতো অ্যাপ তৈরি সহ প্রচুর সুযোগ দেয়। তাঁর মতে, শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে যে স্পেস ইন্ডাস্ট্রির জন্য উপযোগী চাকরি মিসাইল, রাডার এবং ডিফেন্স সেক্টরের জন্যও উপযুক্ত। অর্থাৎ, তারা যদি স্পেস ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি না পেতে পারে, সেক্ষেত্রে রিলেটেড ইন্ডাস্ট্রিজে আরও চাকরির সুযোগ থাকবে।
বিদেশেও রয়েছে চাকরির সুযোগ: এই প্রসঙ্গে একজন প্লেসমেন্ট বিশেষজ্ঞ ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন যে, যেহেতু স্পেস একটি ক্রমবর্ধমান ইন্ডাস্ট্রি, তাই একাধিক দেশে এই সংক্রান্ত চাকরি রয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের গবেষণা অনুযায়ী সারা বিশ্বে ৭৭ টি মহাকাশ সংস্থা রয়েছে এবং সেগুলির মধ্যে ১৬ টির উৎক্ষেপণের ক্ষমতা রয়েছে। এমতাবস্থায়, আপনার যদি একটি বা দু’টি অতিরিক্ত দক্ষতা থাকে, (যেমন একটি বিদেশি ভাষা জানা) সেক্ষেত্রে আপনি বিশ্বের যেকোনো জায়গায় এই সংক্রান্ত কাজ করতে পারেন।”