বাবা নিরাপত্তারক্ষী, মা বিক্রি করতেন চা! ছেলে ISRO-র বিজ্ঞানী হয়ে চাঁদে পাঠালেন চন্দ্রযান

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এখন সমগ্র দেশজুড়ে যে বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সেটি হল চাঁদের দেশে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3)-এর সফল অবতরণ। যার মাধ্যমে রীতিমতো ইতিহাস তৈরি করেছে ভারত (India)। এদিকে, এই বিরাট সফলতা যাঁদের মাধ্যমে এসেছে তাঁরা হলেন ISRO (Indian Space Research Organisation)-র বিজ্ঞানীরা। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং চেষ্টার মাধ্যমেই অবশেষে ভারত পৌঁছে গিয়েছে চাঁদে।

এদিকে, এই মিশনের সাফল্যের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ISRO-র বিজ্ঞানীরা উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামেও। শুধু তাই নয়, তাঁদের সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন সকলেই। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একাধিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখেই তাঁরা সামিল হয়েছেন এই অভিযানে। এমনই একজন বিজ্ঞানী হলেন ছত্তিশগড়ের ভরত কুমার। যিনি চন্দ্রযানের সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর জীবনযুদ্ধের কাহিনি জানলে অবাক হবেন প্রত্যেকেই।

   

ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা ভরত কুমার চরোদার শৈশব অতিবাহিত হয়েছে চরম দারিদ্রতার মধ্যে। তাঁর বাবা সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করতেন এবং মা চালাতেন চায়ের দোকান। তাঁদের স্বল্প উপার্জনের ওপর ভর করে কোনোমতে চলত সংসার। এমনকি, কিছু কিছু সময়ে ভরতের স্কুলের ফি দেওয়ার টাকাও থাকত না তাঁদের কাছে।

আরও পড়ুন: ফিরিয়েছেন ১,৪০০ কোটির প্রস্তাব! প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে রাস্তা তৈরি করে বিশ্বকে অবাক করেছেন ভারতের “প্লাস্টিক ম্যান”

ভারত যখন নবম শ্রেণিতে পড়তেন তখন স্কুল ফি না দেওয়ার কারণে তাঁকে টিসি দেওয়ার উপক্রম তৈরি হয়। পরে অবশ্য স্কুল তাঁর ফি মকুব করে দেয়। ভরতের শিক্ষকরাও তাঁকে অনেক সহযোগিতা করতেন। পাশাপাশি, বই এবং নোটবুক কিনে দিতেন। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন ভরত। এমন পরিস্থিতিতে, কঠোর পরিশ্রম এবং পড়াশোনার মাধ্যমে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে তিনি ধানবাদ IIT-তে ভর্তি হন।

আরও পড়ুন: মাটির ঘরে থেকে শ্রমিকের কাজ করে পড়িয়েছেন মা! আজ IAS হয়ে দেশের সেবা করছেন অরবিন্দ

IIT-তে পেয়েছেন গোল্ড মেডেল: এদিকে, ভরত IIT-তে ভর্তি হলেও সেখানে ফি দেওয়ার মতো অর্থ তাঁর ছিল না। সেই সময় তাঁকে সাহায্য করেন রায়পুরের ব্যবসায়ী অরুণ বাগ ও জিন্দাল গ্রুপ। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভরত IIT থেকে ৯৮ শতাংশ নম্বর পান এবং তিনি গোল্ড মেডেলও অর্জন করেন।

Success Story of ISRO Scientist Bharat Kumar

আর তারপর থেকেই ধীরে ধীরে সফলতা হাসিল করতে থাকেন তিনি। ভারত কুমার যখন IIT-তে ৭ ম সেমিস্টারে অধ্যয়ন করছিলেন তখনই ISRO-র নজর পড়ে তাঁর ওপর। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি ISRO-তে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। তাঁর প্রতিভাকে স্বীকৃতি দিয়ে, ISRO তাঁকে চন্দ্রযান-৩ মিশনের একটি অংশ করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভরত বর্তমানে ISRO-তে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত রয়েছেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর