বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতির (Inflation) কারণে পাকিস্তানের (Pakistan) মানুষ বিপর্যস্ত। বিশেষ করে বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি রীতিমতো হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। এমনকি, মানুষরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সেখানে দরিদ্র পরিবারগুলিও হাজার হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিলের সম্মুখীন হচ্ছে। এই ঘটনায় জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি, যে পরিবারে মাত্র একটি বাল্ব রয়েছে সেখানে বিদ্যুৎ বিল আসছে ১০,০০০ টাকা।
শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের ফয়সালাবাদে একজন ব্যক্তি তাঁর ৪০,০০০ টাকার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে না পেরে গত মঙ্গলবার আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৩৫ বছর বয়সী মুহাম্মদ হামজা আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়ে কোনোমতে পরিবার চালাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায়, পরিবারসূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে না পেরে মুহাম্মদ নিজেকে গুলি করেন। তাঁর দু’জন নাবালক সন্তান রয়েছে।
এদিকে, ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে জ্বলছে পাকিস্তান। পাশাপাশি, এর প্রতিবাদে মানুষ বিদ্যুৎ বিল পুড়িয়ে এবং এর থেকে রেহাই পাওয়ার দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করছেন। পাকিস্তানের সারগোধায় সারগোধা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ডিস্ট্রিক্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ও বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ এহেন বিদ্যুতের বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁরা বিল পরিশোধ করবেন না এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা কাটার যেকোনো চেষ্টাকেও প্রতিহত করা হবে।
আরও পড়ুন: নেপালের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর রূপ পাকিস্তানের! তাও পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারতই
এদিকে, ডেরা গাজী খান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আধিকারিকরা এবং সাধারণ মানুষ সহ ব্যবসায়ীরা ডেরা গাজী খানে বিদ্যুতের বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) ব্যবসায়ীরাও বর্ধিত বিদ্যুতের বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ বিল সহ অন্যান্য সমস্যার বিরুদ্ধেও আগামী বৃহস্পতিবার হরতাল ও চাক্কা জ্যাম হবে বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: কিছুতেই কাটছে না সঙ্কট! IMF-র পর এবার এই ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ২,৪০০ কোটির ঋণ চাইল কাঙাল পাকিস্তান
সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক যে, সরকারও অনিশ্চিত কিভাবে এই সঙ্কট মোকাবিলা করবে! কারণ এটি উদ্বেগের তিনটি ভিন্ন বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখছে। প্রথমত, আর্থিক মন্দা। যার অর্থ পাকিস্তানিদের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তাই, বাড়তি বিদ্যুতের বিল তাঁদের জন্য অত্যন্ত সমস্যা বাড়াচ্ছে। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার কারণে তারা কোনো ত্রাণমূলক ব্যবস্থা নিতে চায় না। তৃতীয়ত, নাগরিকরা ক্রমাগত ক্ষুব্ধ হলে তা পাকিস্তানকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের দিকে নিয়ে যেতে পারে।