বাংলা হান্ট ডেস্ক : বাংলা ইন্ডাস্ট্রির এক প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব হলেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায় (Subhasish Mukhopadhyay)। কৌতুকাভিনেতা (Comedian) হিসেবে তার নাম থাকে সবার আগে। একটা সময় এমন ছিল যে, বাংলা ছবিতে কৌতুকাভিনেতার ভূমিকায় শুভাশিস ছাড়া আর অন্য কাউকে ভাবতেই পারতেননা পরিচালকরা। তবে অনেকেই হয়ত জানেননা যে, এই অভিনেতা আসলে ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলেন। তবে ভাগ্য তাকে এই দুনিয়ায় এনে ফেলে।
অভিনেতার কেরিয়ারের সূচনা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে পূর্ণেন্দু পাত্রীর ‘ছোট বকুলপুরের যাত্রী’ দিয়ে। সেই যে যাত্রা শুরু হয় এরপর ধীরে ধীরে সকলের মনের ঘরে জায়গা করে নেন তিনি। এরপর আর তাকে ফিরে তাকাতে হয়নি। গুরু শিষ্য, বকুল প্রিয়া, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, দাদা ঠাকুর,প্রতিদ্বন্দ্বী, রাজমহল, খোকাবাবু, মেঘে ঢাকা তারা, খোকাবাবু, আক্রোশ, গুগোলে-এর কীর্তি-র মত একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
যে কোনও ছবিতে শুভাশিস থাকা মানেই সেই ছবি হিট। যদিও বেশিরভাগ ছবিতেই কৌতুকাভিনেতা হিসেবেই ধরা দিতেন তিনি। তবে সময়ের সাথে সাথে চিরাচরিত ইমেজ ভেঙে ভিন্ন স্বাদের চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেছিলেন। ২০১২ সালে শুভাশিস অভিনীত টেনিদার চরিত্র আজও দর্শকদের স্মৃতিতে গেঁথে আছে। পাশাপাশি হালফিলের ‘মহালয়া’তে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চরিত্রে, ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ ছবিতে গোঁড়া পুরোহিতের চরিত্রে তার অভিনয় বেশ পছন্দ করেছে ভক্তরা।
আরও পড়ুন : সন্তানের জন্ম দিলেন ঋদ্ধিমা, দাদু হলেন সব্যসাচী, গৌরবের ঘরে ছেলে না মেয়ে?
বড়পর্দার পাশাপাশি অভিনেতার ক্যারিশমা দেখা গেছে ছোটপর্দাতেও। ‘রাখি বন্ধন’, ‘কলের বউ’, ‘জড়োয়ার ঝুমকো’, ‘খেলাঘর’, ‘তারানাথ তান্ত্রিক’ এর মতো একাধিক ধারাবাহিকে প্রাণ খুলে অভিনয় করেছেন শুভাশিস। তবে জেনে অবাক হবেন যে, একটা সময় এমনও গেছে যখন হাতে একটাও কাজ নেই। অভিজ্ঞতার ভান্ডার জমিয়ে বসে আছেন অথচ কেউ তাকে কাস্ট করছেনা।
আরও পড়ুন : ‘হঠাৎই বমি, তারপরেই…’, প্রয়াত হীরক রাজার মন্ত্রী সমীর মুখোপাধ্যায়
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুভাশিসের অভিনয় জীবন শুরু হয় ক্লাস ফোরেই। প্রথম থেকেই থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এছাড়া পড়াশোনাতেও যথেষ্ট তুখোড় ছিলেন অভিনেতা। তবে সবচেয়ে পছন্দের জিনিস ছিল ক্রিকেট। এমনকি একটা সময় তো বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নই দেখতেন তিনি। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা দেখে সেই স্বপ্নকে গলা টিপে মেরে ফেলেন।
আরও পড়ুন : ‘আমাকে আর দেখতে পাবিনা’, বন্ধ হচ্ছে স্মার্ট দিদির হোটেল? হাহুতাশ নন্দিনীর
কলেজের পড়াশোনা শেষ করে যোগ দেন একটি কসমেটিকস কোম্পানিতে। কিছুদিন পর একটি মুদ্রণ সংস্থায় চাকরিতে ঢোকেন শুভাশিস। এইভাবেই চলতে চলতে ১৯৮৭ চলে আসে বড় পর্দায় ডেবিউ করার সুযোগ। এবং এই সুযোগের সম্পূর্ণ সদ্বব্যবহার করেছিলেন তিনি। দক্ষ অভিনয়ের দ্বারা জিতে নেন বাংলার লাখ লাখ মানুষের মন। এবং আজও বাংলার সেরা কৌতুকাভিনেতা বললে মানুষের মাথায় যে নামটা ভাসে তা হল শুভাশিস।