বিশ্বকাপের মঞ্চে সফল হওয়ার অস্ত্র হাতে পেলেন বাবর! এই ক্রিকেটারকে নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে রোহিতদের

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ মহম্মদ রিজওয়ান (Md. Rizwan) এবং সাউদ সাকিলের (Saud Shakeel) চেষ্টায় ভদ্রস্থ জায়গায় পৌঁছেছিলেন বাবর আজমরা। কিন্তু ২৮৭ রানের টার্গেট তাড়া করে ম্যাচ জিততে ব্যর্থ হল নেদারল্যান্ডস। ব্যস দে লিড [Bas de Leede] (৪/৬২, ৬৭) দুই বিভাগেই একা লড়াই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল হাতে হ্যারিস রাউফ (Harris Rauf), হাসান আলী, শাহীন আফ্রিদিদের সামনে নেদারল্যান্ডসের বাকি বেশিরভাগ ব্যাটাররা অসহায় আত্মসমর্পণ করে। ফলস্বরূপ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ৮১ রানের জয় পায় বাবর আজমের (Babar Azam) পাকিস্তান ক্রিকেট দল (Pakistan Cricket Team)। রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) বিরুদ্ধে নামার আগে এই জয় তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

আজ টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তানের দুই ওপেনার ইমাম উল হক এবং ফখর জামানের পাশাপাশি বাবর আজমও চূড়ান্ত ব্যর্থ। পরিস্থিতি সামলান পাকিস্তানের দুই মিডল অর্ডার ব্যাটার মহম্মদ রিজওয়ান (৬৮) ও সাউদ সাকিল (৬৮)। কেউই শতরান পাননি কিন্তু পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক পাকিস্তানের ইনিংসকে তৈরি করেন এবং সাকিল উল্টো দিক দিয়ে আক্রমণ করেন। ফলে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ভদ্রস্থ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে তারা। কিন্তু তাদের দুজনের ১২০ রানের পার্টনারশিপ ভাঙতেই নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে শুরু করে পাকিস্তান। এরপর মহম্মদ নওয়াজ (৩৯), শাদাব খান (৩২) ও হ্যারিস রাউফ (১৬) মরিয়া চেষ্টা করে পাকিস্তানকে ২৮৬ রান অবধি নিয়ে যান। কিন্তু ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে তারা ব্যর্থ হন। আজ যে ভঙ্গিতে সাউদ সাকিল ব্যাটিং করেছেন, সেই ব্যাপারটা প্রতিপক্ষের চিন্তা বাড়াচ্ছে। পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে মহম্মদ রিজওয়ান ছিলেন সবচেয়ে ভরসাযোগ্য। আজ দলের বিপদের সময় তিনি চললেও নেদারল্যান্ডসের স্পিনারদের বিরুদ্ধে অসাধারণ আক্রমণ করে যেন সমস্ত নজর নিজের দিকে কেড়ে নিয়েছিলেন সাউদ। ৫২ বলের ইনিংসে মেরেছিলেন ৯টি চার ও ১টি ছক্কা। ম্যাচের সেরাও হয়েছেন তিনি। ভারতীয় স্পিনারদের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে তার বিরুদ্ধে পরিকল্পনা তৈরি রাখতে হবে।

saud shakeel

বল হাতে দুর্দান্ত পারফরম‍্যান্সের পর দে লিড (৬৭) ব্যাট হাতেও অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন ব্যস দে লিড। কিন্তু উল্টো দিক থেকে কোনও সাহায্য পান নিতে। ফলে ২০৫ রানের স্কোরে গুটিয়ে যায় ডাচরা।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন হ্যারিস রাউফ। তার গতি সামলাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে নেদারল্যান্ডসের ব‍্যাটাররা। ২ উইকেট পেয়েছেন হাসান আলীও। এক উইকেট নিলেও কিছুটা অতিরিক্ত রান বিলিয়েছেন শাহীন আফ্রিদি। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন মহম্মদ নওয়াজ শাদাব খান এবং ইফতিকার আহমেদ।

পাকিস্তান ম্যাচ জিতল ঠিকই, কিন্তু তাদের টপ অর্ডার এবং লোয়ার মিডল অর্ডার কতটা দুর্বল সেটা আজ আরও একবার দেখিয়ে দিয়ে গেল নেদারল্যান্ডস। সেই সঙ্গে আক্রমণ করলে পাকিস্তানের বোলিং যে চাপে পড়বে সেটাও বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন ব্যস দে লিড। ভারতীয় ক্রিকেট দলের পাশাপাশি বিশ্বকাপের অন্যান্য দলগুলিও এই ব্যাপারগুলোর ওপর ভবিষ্যতে নজর রাখবে। আগামী ১৪ ই অক্টোবর ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচে যদি ভারতীয় ব্যাটারদের প্রথম দশ ওভারে পাকিস্তান পেশারদের ওপর অতিরিক্ত আক্রমণ করতে দেখা যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ওভাবে যে পাকিস্তানি কে চাপে ফেলা যাবে তা এশিয়া কাপে ভারত দেখেছিল এবং আজ নেদারল্যান্ডস আবারও প্রমাণ করলো। দুর্ভাগ্যবশত ডাচ দলের গুণগত মানের সঙ্গে পাকিস্তানের গুণগত মানের আকাশ পাতাল তফাৎ। তাই পাকিস্তানের দুর্বলতা ধরতে পারলেও তার ফায়দা উঠাতে পারেনি তারা। ভারত একই ভুল করবে এমন আশঙ্কা করাও ভুল।

আরও পড়ুন: মুখে হাসি ফুটলো রোহিত শর্মার! এক ম্যাচ দেখেই বুঝে নিলেন পাকিস্তানের দুর্বলতা

তবে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম দলের এই ব্যাপারগুলো নিয়ে অতিরিক্ত ভাবিত নন। তিনি নিজেও আজ ভালো খেলতে পারেননি। ১৮ বলে মাত্র ৫ রান করে ড্রেসিংরুমে ফিরেছিলেন তিনি। তবে ফিল্ডিংয়ে তিনি বেশ দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। ম্যাচ শেষে সাক্ষাৎকারে এসে তিনি বলেছেন, “যেভাবে হায়দ্রাবাদের দর্শকরা আমাদের দলকে সারাক্ষণ চিৎকার করে মাঠে উদ্বুদ্ধ করে গিয়েছেন তা দেখে আমরা আপ্লুত। আমরা খুব খুশি এবং ভারতের আতিথেয়তা উপভোগ করছি।”

 

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর