বাংলা হান্ট ডেস্ক : পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হল আজ। মহালয়ার (Mahalaya) ভোরে রেডিওতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের (Birendra Krishna Bhadra) স্তোত্রপাঠ দিয়েই বাঙালির দুর্গাপুজো (Durgapuja) শুরু হয়। এবারও তার অন্যথা হলনা। মাঝে কয়েকটা বছর মানুষ টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে মজলেও এখন আবারও ফিরেছে গায়ে কাঁটা দেওয়া, চোখে জল এনে দেওয়া দরাজ কণ্ঠের ‘চণ্ডীপাঠ’এই (Chandipath)। এইদিন রেডিওর সামনে বসে মহালয়া শুনছেন বাড়ির ছোট থেকে বড় প্রত্যেকেই।
মহালয়ার সঙ্গে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের নাম সমার্থক হয়ে উঠেছে বঙ্গমানসে। অনেকেই হয়ত জানেননা যে, এই কিংবদন্তী মানুষটার কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়েছিল খোদ মহানায়ক উত্তম কুমারকেও (Uttam Kumar)। সত্তরের দশকের ইন্ডাস্ট্রিতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা উত্তম কুমার। তাঁর জনপ্রিয়তার কথা ভেবে আকাশবাণীর তরফ থেকে চণ্ডীপাঠের প্রস্তাব দেওয়া হয় অভিনেতাকে।
তবে অবাক করা বিষয় এই যে, বাংলা সিনেমার সম্রাট উত্তম কুমারের গলায় চণ্ডীপাঠ শুনে মোটেও খুশি হয়নি বাঙলার মানুষ। এমনকি উত্তম কুমারের গলায় চণ্ডীপাঠ শুনে শুরু হয় বিক্ষোভ। লোকজন অফিসের সামনে গিয়ে প্রতিবাদ করতে শুরু করে। আকাশবাণীর অফিসেও ফোনের পর ফোন ঢুকতে থাকে। সবারই বক্তব্য ছিল, আবারও বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে ফিরিয়ে আনা হোক।
আরও পড়ুন : শুরুতেই ছক্কা হাঁকাল ‘দাদাগিরি’, তবে শেষমেশ ট্রফি নিয়ে গেল ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র ভালোবাসার উৎসব
এইদিন অনুষ্ঠানের নামও বদলেছিল আকাশবাণী। ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ নাম পরিবর্তন করে অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় ‘দেবীং দুর্গতিহারিণীম’। তবে উন্মত্ত জনতার ক্ষোভ দেখে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয় কর্মকর্তারা। এরপর মহাষষ্ঠীর সকালে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় ‘চণ্ডীপাঠ’ পুনরায় সম্প্রচার করা হয়। তবে এই গোটা ঘটনায় বাঙালির মহানায়কের কী প্রতিক্রিয়া ছিল?
আরও পড়ুন : ‘সবুজ আমায় প্রভাবিত…’, রাজনীতিতে মিঠাই? সৌমিতৃষার পোস্ট ঘিরে জল্পনা নেটপাড়ায়
শোনা যায়, তিনি প্রথমটা বেশ ভয়ই পেয়ে যান। এমনকি ‘চণ্ডীপাঠ’র প্রস্তাব পাওয়ার পর রাজিই হতে চাননি তিনি। তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের অনুরোধ এড়াতে পারেননি অভিনেতা।হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় রেকর্ড করা হয় ‘দেবীং দুর্গতিহারিণীম’। তবে বাঙলার মানুষ সেটা ভালোভাবে নেয়নি। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত কণ্ঠ যে বাঙালির কাছে একটা আবেগ, সেটা ভালোই বুঝেছিল আকাশবাণী।