বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় আছে, স্বপ্নপূরণের জন্য প্রয়োজন হয় সঠিক পরিশ্রমের। আর এই চিরসত্যকে সামনে রেখেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে সফর শুরু করেন অনেকেই। শুধু তাই নয়, ওই সফরকালে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখে এবং জেদ ও আত্মবিশ্বাসের ওপর ভর করে কিছু জন তৈরি করে ফেলেন অনন্য উত্তরণের কাহিনি (Success Story)। বর্তমান প্রতিবেদনেও আজ আমরা ঠিক সেই রকমই এক ব্যক্তির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যিনি দারিদ্রতাকে জয় করে IAS (Indian Administrative Service) অফিসার হয়ে নজির গড়েছেন। পাশাপাশি করেছেন নিজের স্বপ্নপূরণও।
৫৩৫ তম স্থান অর্জন করেন: মূলত, আজ আমরা আপনাদের কাছে IAS অফিসার নিরঞ্জন কুমারের প্রসঙ্গ তুলে ধরবো। তিনি বিহারের নওয়াদা জেলার বাসিন্দা। নিরঞ্জন তাঁর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ২০২০ সালের UPSC-তে ৫৩৫ তম স্থান অর্জন করেছিলেন। এদিকে, প্রথম প্রচেষ্টায় তিনি ৭২৮ তম স্থান অর্জন করেন।
বাবার সাথে বিক্রি করেছেন খৈনি: নিরঞ্জনের বাবার নাম হল অরবিন্দ কুমার নিরঞ্জনের পিতা। তিনি একটি খৈনির দোকান চালাতেন। আর ওই দোকানের মাধ্যমেই তিনি সংসারের খরচও বহন করতেন। এমতাবস্থায়, ছেলেকে অফিসার করাটা তাঁর কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। করোনা মহামারীর কারণে তাঁর খৈনির দোকানটি বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে, নিরঞ্জনের বাবার স্বাস্থ্যেরও অবনতি হয়। তাই, তিনি দোকান আর খোলেননি। এই ছোট দোকানটি থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৫,০০০ টাকা আয় হত। এদিকে, বাবাকে সাহায্য করার জন্য নিরঞ্জনকেও বসতে হয়েছিল ওই দোকানে। বাবা বাইরে কোথাও গেলেই দোকান সামলাতেন তিনি।
সাহস হারাননি: প্রথম থেকেই নিরঞ্জন আর্থিক প্রতিকূলতাকে তাঁর বাধা হতে দেন নি। বরং, তিনি সবসময় সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেই তার লক্ষ্য স্থির রেখেছিলেন। ২০০৪ সালে নওয়াদার জওহর নবোদয় বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর, নিরঞ্জন ২০০৬ সালে পাটনার সায়েন্স কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এরপরে, তিনি ব্যাঙ্ক থেকে ৪ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে আইআইটি-আইএসএম ধানবাদ থেকে মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি নেন। ২০১১ সালে, নিরঞ্জন ধানবাদের কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডে সহকারী ম্যানেজারের চাকরি পান এবং ওই কাজের মাধ্যমে তিনি তাঁর ঋণ পরিশোধ করেন।
আরও পড়ুন: হয়ে যান সতর্ক! ৫৫ লক্ষ মোবাইলের কানেকশন ব্লক করল সরকার, এই ভুল করলেই হবে সর্বনাশ
এইভাবে পূরণ করেন স্বপ্ন: দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা নিরঞ্জন জানতেন, দুই ছেলে ও এক মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ার মতো টাকা তাঁর বাবা-মায়ের কাবহে নেই। এমন পরিস্থিতিতে নিরঞ্জন জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লিখিত পরীক্ষা দেন এবং পাস করেন। তিনি এটি করেছিলেন কারণ সেখান থেকে তাঁর বিনামূল্যে পড়াশোনা করার সুযোগ ছিল।
আরও পড়ুন: চলছে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর! এই বড় “ডিল” হাসিল করতে হামলে পড়লেন আদানি-আম্বানি
এদিকে, নিরঞ্জন ২০১৭ সালে UPSC পরীক্ষায় প্রথম প্রচেষ্টা করেছিলেন এবং ওই পরীক্ষায় ৭২৮ তম স্থান অর্জন করেন। কিন্তু নিরঞ্জন জানতেন যে, তিনি আরও ভালো ফলাফল করতে পারেন। এর পরে তিনি ফের চেষ্টা করেন এবং ভালো স্থান অর্জন করে একজন IAS অফিসার হিসেবে তাঁর স্বপ্নপূরণ করেন।