বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো শহরে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনের মঞ্চ থেকে ফের আন্তর্জাতিক মহলকে কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলার (Terror Attack) প্রসঙ্গ টেনে পাকিস্তানের নাম না করেই দেশটিকে কার্যত আন্তর্জাতিক মঞ্চে (BRICS Summit) কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তিনি। তার ভাষণে উঠে এল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণে ব্যর্থ বিশ্বের একাধিক দেশের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ। মোদীর (Narendra Modi) বক্তব্যে ভারতীয় কূটনীতির এক নতুন স্পষ্টতা ধরা পড়ল।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলা এখন সময়ের দাবি মোদীর (Narendra Modi)
প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi) বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কোনও সুবিধামতো পদক্ষেপ নয়, এটি হওয়া উচিত নীতিগত বিষয়। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, যারা রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক লাভের জন্য চুপ থাকেন, তারা মৌনভাবে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেন। এই অবস্থান একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। তাঁর মতে, ভারত দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়ে এসেছে, আর তার মূল মদতদাতা পাকিস্তান (Pakistan)। এ বিষয়ে আর কোনও ‘ব্যালান্স’ দেখানোর সময় নেই, বলেই ইঙ্গিত দেন তিনি।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর (Operation Sindoor) পর বদলেছে বার্তা
২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের (Tourist Killing) মৃত্যু হয়। সেই হামলার পর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে পাকিস্তানে ৯টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই মোদী বলেন, “ভুক্তভোগী আর অপরাধীকে এক চোখে দেখা যায় না।” তার এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে বার্তা দিল—সন্ত্রাসবাদ রুখতে হলে এবার সত্যি করে পদক্ষেপ নিন।
ব্রিকস (BRICS Summit) ঘোষণাপত্রে সরাসরি পাকিস্তান নেই, তবু ইঙ্গিত স্পষ্ট
‘রিও ডি জেনেইরো ডিক্লারেশন’-এ বলা হয়েছে, যে কোনও উদ্দেশ্যে, যেখানেই, যেই করুক—সন্ত্রাসবাদ সবসময়ই অপরাধ। যদিও পাকিস্তানের নাম নেই, তবে ‘সীমান্তপারের জঙ্গি হামলা’, ‘অর্থ জোগান’, ‘নিরাপদ আশ্রয়’ ইত্যাদি শব্দবন্ধে স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত মিলেছে। ২০১৭ সালে চিনে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনের (2017 BRICS) ঘোষণাপত্রে যেমন লস্কর-ই-তইবা ও জইশ-এর নাম ছিল, এবার নাম না থাকলেও সুর অনেক বেশি কড়া।
আরও পড়ুনঃ মোদীর পর কে? প্রধানমন্ত্রী পদে উঠে এলো তিন নাম, বিজেপিতে তোলপাড়
২০২৬ সালে ব্রিকস সম্মেলনের আয়োজক ভারত (India)
ঘোষণাপত্রে জাতিসংঘের ‘Comprehensive Convention on International Terrorism’ গৃহীত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। মোদী জানিয়েছেন, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে ভারত (India BRICS 2026) ব্রিকস সম্মেলনের আয়োজক হবে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় ভারত আবারও তার অবস্থানে অনড় থাকবে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মোদীর এই বার্তা পাকিস্তান-বিরোধী অবস্থানকে আরও মজবুত করল।