বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি আবহে প্রাথমিকের টেট দুর্নীতি মামলা (TET Scam) কোন মোড় নেয় সেদিকে নজর রয়েছে সকলের। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের প্রাথমিকের ৩২০০০ চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। রায়ের পাল্টা মামলা চলছে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চে।
হাইকোর্টে সওয়াল চাকরিহারাদের | TET Scam
সোমবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে টেট মামলার শুনানি ছিল। শুনানিপর্বে চাকরিহারাদের একাংশের আইনজীবী আদালতে বলেন, সরকারি দুর্নীতির কারণেই অনেক যোগ্যের চাকরি বাতিল হয়েছে।
আইনজীবী বলেন, ”কম সময়ে সিঙ্গেল বেঞ্চ অর্ডার দিয়েছিল। আমরা ১০০০০ জন মতো প্রশিক্ষিত। নিয়োগের সময় অনেকের প্রশিক্ষণ ছিল না বলে দুর্নীতির কারণে আমরাও বাতিল হয়ে গেলাম। নিয়োগের সময় আনট্রেন্ড ছিলাম ঠিকই কিন্তু ১৯ এপ্রিল ২০১৯ এর পর থেকে আর আনট্রেন্ড (প্রশিক্ষণবিহীন) ছিলাম না।”
তার কোথায়, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আবেদনকারীরাও প্রশিক্ষিত ছিলেন না। কিন্তু আমাদের কথা উল্লেখ করা হয়নি।” উল্লেখ্য, এই মামলায় ৬৩৫ জন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়। তার ভিত্তিতে ১২ মে ২০২৩ কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চ নির্দেশ দেয়।
আইনজীবীর কথার প্রেক্ষিতে বিচারপতি চক্রবর্তী প্রশ্ন করেন, ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট কি সঠিক পদ্ধতিতে হয়েছিল? আইনজীবী বলেন, ”একক বেঞ্চ রায়ে কখনই অ্যাপটিটিউড টেস্টের সংজ্ঞা উল্লেখ করা হয়নি। অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও আলাদা প্রশ্ন, নির্দিষ্ট গাইডলাইন ছিল না।” আইনজীবীর দাবি, একক বেঞ্চ নিজের ধারণা অনুযায়ী রায় দিয়েছিল। আইনজীবীর কথায়, ”জেলাভিত্তিক নিয়োগের তালিকা দেখুন। আবেদনকারী ও শেষ নিয়োগভুক্তের নম্বর থেকেই দুর্নীতি যে হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে না।”
কোন মামলা?
২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সাল থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৪২ হাজার ৯৪৯ জন চাকরি পান। কিন্তু, নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে একাধিক ‘ক্রুটি’র কথা জানিয়ে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর প্রেক্ষিতে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দেন। নতুন নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্যকে।
আরও পড়ুন: সামনে সুপ্রিম নির্দেশিকা! DA মামলা নিয়ে বিরাট ‘স্বস্তি’ এল সরকারি কর্মীদের মনে, বিপাকে রাজ্য?
এরই মধ্যে হাইকোর্টের একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। সেই মামলাই বর্তমানে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে চলছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ জুলাই। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি ঝুলছে।