বাংলা হান্ট ডেস্ক : গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যাতে (Ayodhya) পুনরায় বিরাজমান হলেন রামলালা (Ramlala)। ৫০০ বছরের এক সংঘর্ষের ইতি টেনে বেশ সাড়ম্বরের সাথে উদ্বোধন হয় রাম মন্দিরের (Ram Mandir)। এই পথ মোটেই সহজ থাকেনি, অতি দুর্গম রাস্তা পেরিয়ে অবশেষে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে শান্তি এনে দিয়েছে ভগবান শ্রীরামের নতুন মন্দির। সাড়ম্বর সমারোহে অযোধ্যা নগরীতে ফিরলেন রামলালা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) রামলালার মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন।
গত ২২ জানুয়ারি প্রায় সারা দেশেই উৎসবের আবহ বিরাজমান হয়। সমস্ত রাজ্যেই মানুষের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে এত আনন্দ, এত উন্মাদনার পিছনে রয়েছে লম্বা একটা আন্দোলন, বিশৃঙ্খলা এবং বিবাদের ইতিহাস। বাবরি মসজিদের ধ্বংসের পর থেকেই সেই বিতর্ক বাড়ে। মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সাফল্য মেলে হিন্দুপক্ষের।
অযোধ্যার ভব্য রামমন্দিরের নির্মাণের পিছনে অনেকের পরিশ্রম রয়েছে। বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে, সম্পদ এবং রাজত্ব খোয়া গিয়েছে অনেকের। কিন্তু যে কতিপয় ব্যক্তি না থাকলে এই মন্দির নির্মাণ অসম্ভব ছিল সেই নামের মধ্যে রয়েছে এক মুসলিম ধর্মাবলম্বী ASI Officer এর নাম। তিনি শ্রদ্ধেয় কেকে মহম্মদ (KK Muhammad)। নিজের কর্মজীবনের সময় বাবরি মসজিদের তলায় খোঁজ করতে গিয়ে প্রথমবারের জন্য হিন্দু মন্দিরে ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান।
আরও পড়ুন : ২০ বছরেও পারলেন না! ক্ষমা চাইলেন মমতা, ‘রামাতঙ্ক’ বলে পাল্টা বেনজির তোপ শুভেন্দুর
মুসলিম ধর্মাবলম্বী হলেও KK Muhammad তার কর্তব্যে ছিলেন অবিচল। প্রায় তার কারণেই আজ রাম মন্দিরের উদ্বোধন সফল হয়েছে। KK Muhammad তার বক্তব্যে এক জায়গায় নিজের খোঁজ সম্পর্কে বলেন, “আমরা সেই সময় ১২টি পিলার দেখেছিলাম। একটা পিলার দেখে মনে হয়েছিল এখানে মন্দির ছিল। একটা পিলারের নীচের দিকে একটা পূর্ণ কলস ছিল। এটা হিন্দু ধর্মে সমৃদ্ধির প্রতীক। অষ্টমঙ্গল চিহ্নও ছিল। হিন্দু ভবনে এটা খুব দেখা যায়। ১২শ শতকে এটা খুব দেখা যেত।”
আরও পড়ুন : ঠিকানা বদলে গেল পার্থ বান্ধবীর! আলিপুর থেকে এবার কোন জেল? জল্পনা তুঙ্গে
নিজের নানান বক্তব্যে KK Muhammad তার মত প্রকাশ করে বলেন, মক্কা এবং মদিনা যেমন মুসলিমদের জন্য অতীব পবিত্র স্থান হিন্দুদের ক্ষেত্রে সেই একই মূল্য রয়েছে অযোধ্যার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দ্বিতীয়বার প্রফেসর বিআর মণির নেতৃত্বে খনন করতে গেলে সেখানে পিলার এবং টেরাকোটার মূর্তি উদ্ধার হয়। নতুন এই খোঁজ সেখানে রাম মন্দিরের অস্তিত্ব প্রমাণ করে।
আরও পড়ুন : ‘অনুব্রতকে ভোলা যাবে না’, বীরভূমের কোর কমিটি থেকে বাদ কাজল, বড় ঘোষণা মমতার
কেকে মহম্মদ এক কথোপকথনে বলেন যে,“আমার কাজে আমিই একমাত্র মুসলিম ছিলাম। কিন্তু মণির খনন কাজে এক চতুর্থাংশ শ্রমিক ছিলেন মুসলিম ধর্মের, যাতে কোনও পক্ষপাতিত্ব না করা হয়। সবটা ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছিল। কিন্তু সত্যি ক্রমশ প্রকাশিত হয়”। এখানে উল্লেখ্য যে, রাম মন্দিরের পক্ষে কথা বলায় বিস্তর সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। এমনকি নানান রকম ফতোয়া আসে মুসলিম ধর্মগুরুদের কাছ থেকে, কিন্তু কেকে মহম্মদ নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থেকে সমস্ত তথ্য কোর্টের সামনে তুলে ধরেন।