বাংলাহান্ট ডেস্ক: লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে সন্ত্রাসী সংযোগের অভিযোগে বরখাস্ত কুপওয়ারা জেলার দুই সরকারি কর্মী। শুক্রবার জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার (Manoj Sinha) নির্দেশেই ওই দুই কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। এর আগে গত বছরই এই দুই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এবার সংবিধানের ধারা অনুযায়ী তাঁদের বরখাস্ত করল কাশ্মীর সরকার।
কাশ্মীরে বরখাস্ত ২ সরকারী কর্মী (Jammu and Kashmir)
শুক্রবার জেহাদী কার্যকলাপের জন্য ২ সরকারী কর্মচারীকে বরখাস্ত করে কাশ্মীর সরকার। জানা যাচ্ছে বরখাস্ত হওয়া দুই কর্মী দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র চোরাচালান এবং জঙ্গিদের লজিস্টিক সহযোগিতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, তারা পাকিস্তানপন্থী জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা-র সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখত এবং সংগঠনটিকে নানা উপায়ে সহায়তা দিচ্ছিল।
বরখাস্তকৃত ২ কর্মীর পরিচয়
সূত্রের খবর যাদের বরখাস্ত করা হয়েছে তারা হলেন কেরানের সিয়াদ আহমেদ খান ও কুপওয়ারার কুরশিদ আমহমেদ। সিয়াদ ভেড়া পালন বিভাগে সহকারী স্টকম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং খুরশিদ আহমেদ ছিলেন পেশায় একজন শিক্ষক। সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যোগসূত্রের জন্য গত বছর দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। জানা যাচ্ছে, পাকিস্তান থেকে আসা একটি অনুপ্রবেশকারী দলকে আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়েছিল সিয়াদকে। সেই সময়ই গত বছরের ২৪ জানুয়ারি কেরানের পীরবাবা মাজারে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ দল তাঁকে আটক করে গ্রেফতার করে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি একে অ্যাসল্ট রাইফেল। পুলিশের নথিতে লস্কর-ই-তৈবার সহযোগী ও আন্ডারগ্রাউন্ড কর্মী হিসেবে নামও রয়েছে তার। খুরশিদ আহমেদও সক্রিয়ভাবে লস্কর-ই-তৈবার একজন সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন এবং তাঁকে গত বছর অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়।
প্রশাসনের ভূমিকা
শুক্রবারই জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার নির্দেশে এই দুই কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর সংবিধানের 311(2)(c) ধারা অর্থাত্ “জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে” তদন্ত ছাড়াই বরখাস্তের অনুমতি দেয়, সেই ধারা প্রয়োগ করেই তাঁদের বরখাস্ত করা হয়।। জানা যাচ্ছে গত বছরের অক্টোবরে ওমর আবদুল্লাহ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো কাশ্মীরে সরকারি কর্মচারীদের ছাঁটাই করা হল। সূত্রের খবর অনুযায়ী ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত এমন ৭৭ জন সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত।
জম্মু ও কাশ্মীরে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদ প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে জঙ্গী দমনে এবং এরকম রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করতে প্রশাসন বরাবরই সদর্থক ভূমিকা পালন করে এসেছে। পাশাপাশি প্রশাসনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা দেশবিরোধীদের খুঁজে বের করতে তৎপর গোয়েন্দারাও। সীমান্ত পারাপার করে অস্ত্র ও জঙ্গি অনুপ্রবেশ বন্ধ করা থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে প্রশাসন। সাম্প্রতিক সময়ে লেফট্যানেন্ট গভর্নর মনোজ সিনহার নেতৃত্বে নেওয়া কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ স্পষ্ট করেছে যে কাশ্মীর প্রশাসন “জিরো টলারেন্স নীতি” অনুসরণ করছে।