বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর জি কর (RG Kar) হাসপাতালের চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন মামলায় ফের উত্তেজনা ছড়াল আদালত চত্বরে। শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে ষষ্ঠ স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর আদালতের বাইরে তদন্তকারী আধিকারিক সীমা পাহুজাকে লক্ষ্য করে ক্ষোভ উগরে দিলেন নির্যাতিতার মা। ঘটনাকে ঘিরে তৈরি হয় তীব্র চাঞ্চল্য।
আদালতের বাইরে আরজি করের (RG Kar) নির্যাতিতার মায়ের চিৎকার
শুক্রবার শুনানির শেষে আদালতের বাইরে সিবিআইয়ের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন সীমা পাহুজা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। সেই সময়ই নির্যাতিতার মা হঠাৎ তাঁদের দিকে এগিয়ে গিয়ে চিৎকার করে বলেন, “এই হচ্ছে শয়তান, এই হচ্ছে মেন কালপ্রিট।” এরপর তিনি আরও বলেন, “আপনারা সরকারের মাইনে নেন। আপনাদের চাকরি খেয়ে নেওয়া উচিৎ। আপনারা আদালতে ঢুকতে দেননি। আপনারাই পিটিশন দিতে দেননি।” প্রত্যক্ষদর্শীদের সামনে এই ঘটনায় অস্বস্তি তৈরি হয়। যদিও সীমা পাহুজা বা সিবিআইয়ের অন্য আইনজীবীরা কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। পুলিশ ও আইনজীবীরা নির্যাতিতার মা-বাবাকে সরিয়ে নিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, আরজি করে (RG Kar) চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ একদিনের মধ্যেই মামলায় পদক্ষেপ করেছিল। পরে সিবিআই তদন্ত হাতে নিয়ে সাড়ে পাঁচ মাসের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় এবং অভিযুক্তকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। তবু নির্যাতিতার পরিবার জোর দিয়ে আসছে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ও প্রমাণ লোপাটের তদন্তে। এদিন ষষ্ঠ রিপোর্টে সিবিআই জানায়, নতুন ছয়জন সাক্ষীকে জেরা করা হয়েছে।
আদালতে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অভিযোগ করেন, সাজা ঘোষণার সময় বিচারক চারজন আধিকারিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, গাফিলতির প্রসঙ্গও ওঠে। তবু এখনও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সিবিআই। পাশাপাশি হাসপাতালের (RG Kar) এমএসভিপির ভূমিকা, ঘটনাস্থলে কে প্রথম নির্যাতিতাকে দেখেছিল, কে প্রথম পরিবারকে খবর দিয়েছিল, এসব বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর মেলেনি বলেও দাবি করেন তিনি। আইনজীবীর বক্তব্য, এইভাবে তদন্ত চললে পরিবার কখনওই পূর্ণ বিচার পাবে না।
আরও পড়ুনঃ ৬ মাসে পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি তদন্ত শেষ করতে হবে, অয়ন শীলের জামিন খারিজ করে জানাল সুপ্রিম কোর্ট
সিবিআইয়ের আইনজীবীরা অবশ্য দাবি করেন, আরজি করের (RG Kar) ধর্ষণ ও খুনের সমস্ত প্রমাণ সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের দিকেই নজর দিচ্ছে সংস্থা। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ১৪ নভেম্বর। সেদিন আরও একটি রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে সিবিআই। কিন্তু তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে নির্যাতিতার মায়ের ক্ষোভ যে আদালত চত্বরেই বিস্ফোরিত হলো, তা নতুন করে প্রশ্ন তুলছে মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে।