ঘনিয়ে আসছে বিপদ? আচমকাই জেগে উঠল ভারতের একমাত্র আগ্নেয়গিরি, দেখুন ভিডিও

Published on:

Published on:

Suddenly only active volcano of India erupts.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি (Volcano) ব্যারেন দ্বীপে ফের অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে। আন্দামান সাগরে অবস্থিত এই জনবসতিহীন দ্বীপে টানা দু’বার মৃদু অগ্ন্যুৎপাত রেকর্ড করা হয়েছে—১৩ সেপ্টেম্বর এবং ২০ সেপ্টেম্বর। ভারতীয় নৌবাহিনী ইতিমধ্যেই অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য ভিডিও করে রেখেছে। আপাতত আশেপাশের এলাকায় বড়সড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। তবে অগ্ন্যুৎপাতের জেরেই আন্দামানে ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

জেগে উঠল ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি (Volcano)

ব্যারেন দ্বীপ সম্পূর্ণভাবে আগ্নেয় উপাদানে গঠিত একটি আগ্নেয় দ্বীপ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ৩৫৪ মিটার। দ্বীপে মানুষের বসতি নেই, তবে এখানে নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী এবং পাখির আবাস। এই আগ্নেয়গিরিটি (Volcano) আসলে টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষজনিত সাবডাকশন জোনে অবস্থিত, যেখানে ভারতীয় প্লেট বার্মা প্লেটের নিচে প্রবেশ করছে। সেই চাপ থেকেই ম্যাগমা উপরে উঠে আসে এবং অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন: বারংবার রক্তচক্ষু আমেরিকার! এবার ভারতের দিকে হাত বাড়িয়ে বড় “অফার” দিল এই দেশ

এবারের অগ্ন্যুৎপাত (Volcano) ছিল স্ট্রম্বোলিয়ান ধরনের। অর্থাৎ, মৃদু কিন্তু ঘন ঘন লাভা ও ধোঁয়া নির্গত হয়েছে। বিশেষত ২০ সেপ্টেম্বরের অগ্ন্যুৎপাতে লাভার স্রোত প্রবাহিত হতে দেখা গিয়েছে। যদিও লাভা ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লেও আশেপাশের দ্বীপ বা রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারের জন্য কোনও সতর্কতা জারি করা হয়নি।

ঐতিহাসিক তথ্য বলছে, ব্যারেন দ্বীপে প্রথম অগ্ন্যুৎপাত (Volcano) রেকর্ড হয়েছিল ১৭৮৯ সালে। দীর্ঘ নীরবতার পর ১৯৯১ সালে বড় অগ্ন্যুৎপাত ঘটে, যা অনেকদিন সক্রিয় ছিল। এরপর ২০১৭ এবং ২০১৮ সালেও দ্বীপটি সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। ফলে বর্তমান অগ্ন্যুৎপাতকে বিজ্ঞানীরা অস্বাভাবিক মনে করছেন না, বরং এটি ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক ফল বলেই মনে করা হচ্ছে।

পরিবেশবিদরা অবশ্য সতর্ক করে বলেছেন, যদিও এই অগ্ন্যুৎপাত সরাসরি মানুষের ক্ষতি করছে না, তবে ছাই ও গ্যাস কাছাকাছি সামুদ্রিক প্রাণী ও প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি করতে পারে। লাভার সংস্পর্শে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একই সঙ্গে, অগ্ন্যুৎপাত (Volcano) থেকে নির্গত ধোঁয়া বিমান চলাচলের ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

Suddenly only active volcano of India erupts.

আরও পড়ুন:আরও শক্তি বাড়বে ভারতীয় নৌবাহিনীর! শত্রুপক্ষের ঘুম ওড়াতে “এন্ট্রি” নিচ্ছে INS অ্যান্ড্রোথ

বর্তমানে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভূতাত্ত্বিক দফতর (জিএসআই) পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে। নৌবাহিনী দ্বীপের চারপাশের সমুদ্রপথে টহল দিচ্ছে এবং ভূতাত্ত্বিকরা অগ্ন্যুৎপাতের (Volcano) ধরণ ও তীব্রতা বিশ্লেষণ করছেন।

ভারতের কাছে ব্যারেন দ্বীপ কেবলমাত্র একটি আগ্নেয় দ্বীপ নয়, বরং প্রকৃতির শক্তির প্রতীক। জনবসতিহীন ও বন্ধ্যা হলেও এটি বিজ্ঞানীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার ক্ষেত্র, যেখানে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের ভেতরে চলমান প্রক্রিয়ার বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়। আর প্রতিবার অগ্ন্যুৎপাতের (Volcano) মাধ্যমে মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতির শক্তি মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে হলেও তাকে বুঝে চলাই ভবিষ্যতের একমাত্র উপায়।