বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বৃষ্টির জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সিইএসসি ও কলকাতা পুরসভাকে পৃথক রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৭ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে।
মৃত্যুর দায় এড়ানো যাবে না, স্পষ্ট জানালো হাই কোর্ট (Calcutta High Court)
কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) জানিয়েছে, শহরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে পুরসভাকে ব্যাখ্যা দিতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংযোগ রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সিইএসসি’র রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, এই মৃত্যুর দায় এড়ানো যাবে না।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে কার্যত বানভাসি হয়ে পড়ে শহর কলকাতা। গলি থেকে বড় রাস্তা, সব জায়গা জলমগ্ন হয়ে ওঠে। সেই জমা জলের মধ্যেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ১১ জন। কালিকাপুর, গড়িয়াহাট, বেনিয়াপুকুর, বেহালা, মোমিনপুর, বালিগঞ্জ, নেতাজিনগর, ইত্যাদি শহরের একাধিক এলাকা থেকে মৃত্যুর খবর এসেছে। নেতাজিনগরে এক সাইকেল আরোহী জমা জলের মধ্যে ব্যালান্স হারিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি ছুঁতেই মৃত্যু হয়। কালিকাপুরে একইভাবে মারা গিয়েছেন রাম গোপাল পণ্ডিত নামে এক সাইকেল আরোহী। রাস্তায় ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক তার সেই মৃত্যুর কারণ বলে জানা গেছে। অবস্থা সামলাতে সিইএসসিকে বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণ ঘোষণা
ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘোষণা করেছেন, প্রতিটি মৃত পরিবারের জন্য রাজ্যের তরফে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারকে সিইএসসি’র তরফে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি। আরও বলেছেন, মৃত পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে। যদি সিইএসসি চাকরি না দেয়, তবে রাজ্যের পক্ষ থেকে বিশেষ হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনঃ জামিনের পরের দিনই ইডি দপ্তরে ফের চন্দ্রনাথ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন মোড়
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর আদালত (Calcutta High Court) প্রশাসন এবং বিদ্যুৎ সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে শহরের নিকাশি ও বিদ্যুৎ নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার কথাই বলা হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ নভেম্বর।