বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (DVC) মঙ্গলবার সকালে জল ছাড়ার পরিমাণ অনেকটাই কমিয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে মোট ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যে পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া হচ্ছে ২৩ হাজার কিউসেক এবং মাইথন জলাধার থেকে ১২ হাজার কিউসেক।
ডিভিসি (DVC) দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ তৃণমূল নেতৃত্বর
অন্যদিকে, রাজ্যকে না-জানিয়ে জল ছাড়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবারই মাইথনে ডিভিসি-র (DVC) দপ্তরের সামনে বিক্ষোভে বসছেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।
পুজোর মরসুমে কেন রাজ্য সরকারকে না-জানিয়ে জল ছেড়েছে ডিভিসি (DVC)? শুক্রবার এই প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সোশাল মিডিয়ায় অভিযোগ করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সংস্থা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে এবং একতরফা’ জল ছেড়ে বাংলাকে বিসর্জন দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে শনিবার কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী সিআর পাতিল সেই অভিযোগ খারিজ করেছেন। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া জল ছাড়ার পরিসংখ্যান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার রাতে জানিয়েছিলেন, ডিভিসি (DVC) কর্তৃপক্ষ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাতিল বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি করা পরিমাণের অর্ধেকেরও কম জলই প্রকৃতভাবে ছাড়া হয়েছে।” ‘ডিভিসি রেগুলেশন কমিটি’ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মাইথন জলাধার থেকে ৪২৫০০ কিউসেক এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ২৭৫০০ কিউসেক, অর্থাৎ মোট ৭০০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। পাতিল এই তথ্য সোশাল মিডিয়ায় তুলে বলেন, “এটি ১ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক নয়, যেমনটি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।”
গত সপ্তাহে ডিভিসি (DVC) জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা দামোদর অববাহিকার জেলাগুলিতে সতর্কতা জারি করেছিল। কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে জল ছাড়াকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। পুজোর মরসুমে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলার বিস্তীর্ণ অংশ পুনরায় জলমগ্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ইতিমধ্যেই শিলাবতী নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘাটাল মহকুমার কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জলমগ্ন চন্দ্রকোনা, ঘাটাল ছাড়াও ঘাটাল পুরসভার ১২টি ওয়ার্ডের জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ঘাটাল পুর এলাকায় এখনও বন্যার সঙ্কট দেখা দেয়নি বলেই জানিয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুনঃ ক্যামেরাবন্দি হামলাকারী, ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের সত্ত্বেও গ্রেপ্তার শূন্য! উঠছে প্রশ্ন
এই পরিস্থিতিতে ডিভিসি (DVC) জল ছাড়ার পরিমাণ কমানোর ফলে প্রশাসন আপাতত স্বস্তিতে রয়েছে। বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় জল ছাড়ার পরিমাণ কমানো হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে হাওড়া, হুগলির দামোদর তীরবর্তী নিম্ন অববাহিকায় নতুন করে জল জমার আশঙ্কা আপাতত নেই।