বাংলা হান্ট ডেস্ক : গত কয়েকবছর ধরে দেশে রাম নবমীকে নিয়ে এক আলাদা উন্মাদনা শুরু হয়েছে। হালফিলের সময়ে দেশের প্রায় প্রতিটি কোনায় সাড়ম্বরে রাম নবমী পালন করে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনও এই বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে এই দিনটিকে পালন করে। আর এবার এই রামনবমীর দিন রাজ্যজুড়ে ছুটি ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।
নির্বাচনের পূর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তকে মাস্টারস্ট্রোক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তে একেবারেই খুশি নন ‘গানওয়ালা’ কবীর সুমন। এইদিন রাজ্য সরকারের একনিষ্ঠ সমর্থকের গলায় শোনা গেল অভিযোগের সুর। রাম নবমী উপলক্ষে ছুটি দেওয়ার রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন তিনি।
এইদিন ফেসবুকে খোলা চিঠি আকারে তিনি লেখেন, ‘আর পারলাম না। রামনবমীতেও আমার রাজ্যে ছুটি। মানছি না। রামনবমী = জাতীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন দিবস। ঐ দিন হবে আমার রাজ্যে ছুটির দিন। চমৎকার। অনেক দিন আগে আমাদের গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন বোম্বের শিল্পীদের আমরা এত টাকা, সম্মান দিয়ে বাংলায় আনি কেন? কেন তাদের দিয়ে গান গাওয়াই? বোম্বের লোকেরা কি ওদের গণেশ পুজোয় বাঙালি শিল্পীদের নিয়ে যায়? হিন্দিহিন্দুত্বওয়ালাদের তোয়াজ করতে রামনবমীর ছুটি? মানছি না আমি।’
এখানেই শেষ নয়। এইদিন তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাধ্য হচ্ছি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতা করতে। এই সরকার বাংলা খেয়ালকে মান্যতা দিয়েছেন। তাদের কুর্ণিশ জানিয়েছি বারবার। কিন্তু এ রাজ্যের ভাষা বাংলা। সেই ভাষায় খেয়াল রচনা গাওয়া শেখানো হবে এটাই তো স্বাভাবিক। কাজেই রাজ্য সরকার অস্বাভাবিক কিছু করেননি। তাদের করণীয় কাজের সীমা পেরিয়ে করেননি কিছু।’
রাম নবমীর পাশাপাশি নিজের সঙ্গীত অ্যাকাডেমি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলা খেয়ালের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম একজন নাগরিক হিসেবে। শারীরিক বিকলতা সত্ত্ব্বেও আমি বাংলা খেয়াল নিয়ে কাজ করে যাবো যতদিন পারব। চেষ্টা করব একটা একাডেমি তৈরি করে যেতে যা সরকার বা কোনও দল বা নেতার মুখাপেক্ষী থাকবে না। জয় বাংলা, জয় বাংলা ভাষা, জয় বাংলা খেয়াল কবীর।’