বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির জন্য সরাসরি কেন্দ্র সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মমতার অভিযোগ, বন্যা ত্রাণ তহবিল ও নদী ডেজিং নিয়ে বাংলাকে বঞ্চনার করেছে কেন্দ্র (Central Government)! ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন গঠনের জন্যও তাঁর পরামর্শকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে স্পষ্ট অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা। এবারে পাল্টা মমতার দাবিসমূহ খারিজ করে জবাব দিল কেন্দ্র।
মমতার অভিযোগ নস্যাৎ কেন্দ্রের | Mamata Banerjee VS Central Government on flood management
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পাল্টা দাবি, আন্তঃসীমান্ত নদী সমস্যা নিয়ে ভুটানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে ভারত। বাংলাকে বন্যা মোকাবিলা কর্মসূচির আওতায় ১২৯০ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি কেন্দ্রের মোদী সরকারের।
বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে মমতার দাবি ছিল, ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন গঠনের জন্য তাঁর পরামর্শকে পাত্তা দেয়নি কেন্দ্রের সরকার৷ কমিশন না হলে উত্তরবঙ্গকে বারংবার বন্যার কবলে পড়তে হবে বলেও আশঙ্কাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, বন্যা ত্রাণ তহবিলের ক্ষেত্রেও বাংলা কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নদী পরিষ্কার বা ডেজিংয়ের কাজও কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে ৷
এরই পাল্টা জলশক্তি মন্ত্রক সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে জানায়, “উত্তরবঙ্গকে প্রভাবিত করে এমন নদী ভাঙন,পলি জমা এবং আকস্মিক বন্যার সমস্যা মোকাবিলার উদ্দেশে এ দেশ ও ভুটান মধ্যে জয়েন্ট গ্রুপ অফ এক্সপার্টস (জেজিই), জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিম (জেটিটি) এবং জয়েন্ট এক্সপার্টস টিম (জেইটি) এর মতো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। বাংলার সরকারের আধিকারিকরা এই যৌথ সংস্থাগুলির সদস্য।”
জলশক্তি মন্ত্রক জানায়, সিদ্ধান্ত হয়েছে ভুটানের পারোতে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক ১১তম জেজিই সভায় পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশকারী আটটি নদীর ভাঙন ও পলিমাটি নিষ্কাশনের বিষয়ে একটি যৌথ গবেষণা করা হবে। হাসিমারা ঝোড়া, জোগিখোলা, রোকিয়া, ধওলা ঝোড়া, গাবুর বসরা, গাবুর জ্যোতি, পানা এবং রায়ডাক নদীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই নদীগুলির উপর বিস্তারিত গবেষণা পরিচালনা করার জন্য এবং পরবর্তী জেটিটি সভায় উপস্থাপন করার কথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বলা হয়েছে।
কেন্দ্র জানিয়েছে ভারতে প্রবাহিত নদীগুলির উপর বন্যার পূর্বাভাস জানার জন্য ভুটানের জলবিদ্যুৎ পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে। বন্যা ত্রাণ প্রকল্প সম্পর্কিত কোনও তহবিল প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আটকে নেই বলে স্পষ্ট করেছে কেন্দ্র। একইসাথে বন্যা ত্রাণ ও সীমান্ত এলাকার কর্মসূচির (এফএমবিএপি) অধীনে রাজ্যকে ইতিমধ্যে ১২৯০ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট করেছে কেন্দ্র সরকার।
আরও পড়ুন: বাজল ছুটির ঘণ্টা! অবশেষে রাজ্য থেকে বিদায় নিচ্ছে বর্ষা, দিনক্ষণ জানাল আবহাওয়া দপ্তর
এদিকে গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান এবং নমামি গঙ্গে কর্মসূচির আওতায় এ রাজ্যে ৫ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা মূল্যের ৬২টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়। কেন্দ্র তরফে উল্লেখ করা হয়েছে এর মধ্যে ৩১টি পলি নিষ্কাশন অবকাঠামো প্রকল্প, ৩০টি ঘাট ও শ্মশান সম্পর্কিত কাজও করা হবে।
ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার আওতায় কলকাতার টালি নালা প্রকল্প নামে একটি বড় নদী পুনরুজ্জীবন উদ্যোগও ইতিমধ্যেই শীলমোহর দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র নদী ব্যবস্থাপনা এবং বন্যা মোকাবিলার জন্য ভুটান ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলেও দাবি করা হয়েছে ওই পোস্টে।