বাংলাহান্ট ডেস্ক: মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ৭৩তম জন্মদিনে তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে উষ্ণ শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি আলোচনা হয়েছে ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে আরও মজবুত করার বিষয়ে। মোদি ফোনালাপে পুতিনকে জানান, তাঁর সরকার রুশ প্রেসিডেন্টকে ভারতে স্বাগত জানানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ডিসেম্বর মাসে পুতিন আসছেন নয়াদিল্লিতে, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই সফর এমন এক সময়ে ঘটতে চলেছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শুল্কযুদ্ধ’ বিশ্ব অর্থনীতিতে চাপে ফেলেছে। ফলে দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে এই বৈঠককে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
জন্মদিনে পুতিনকে শুভেচ্ছা মোদির (Narendra Modi)
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোদি (Narendra Modi) ও পুতিনের বৈঠকে শুধু বাণিজ্য বা প্রতিরক্ষা নয়, ভূ-রাজনৈতিক নানা বিষয়েও আলোচনা হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাড়তে থাকা ঘনিষ্ঠতার প্রেক্ষিতে রাশিয়া চাইছে নয়াদিল্লির সঙ্গে তার ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাক। অপরদিকে, ভারতও রাশিয়াকে তার দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য মিত্র হিসেবে দেখতে চায়, বিশেষ করে শক্তি, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে।
আরও পড়ুন:UPI ব্যবহারকারীদের জন্য বড় খবর! RBI-র নির্দেশ মেনে ৮ অক্টোবর থেকে বদলে যাচ্ছে এই নিয়ম
সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভারতের প্রতি নিজের আস্থার কথা স্পষ্ট করে দেন ভ্লাদিমির পুতিন। ১৪০টি দেশের প্রতিনিধিদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনওদিন কোনও সমস্যা ছিল না। আমি জানি, ভারত কখনও অপমান সহ্য করবে না। বাইরে থেকে যতই চাপ আসুক না কেন, ভারত মাথা নোয়াবে না।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করে পুতিন আরও বলেন, “মোদি এমন কোনও পদক্ষেপ নেবেন না যাতে তাঁর দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়।”
Spoke with my friend President Putin and conveyed warm birthday greetings and best wishes for his good health and long life. Deeply appreciate his personal commitment to deepening India–Russia ties over the years.@KremlinRussia_E
— Narendra Modi (@narendramodi) October 7, 2025
রুশ প্রেসিডেন্ট আরও একবার ভারতের পাশে দাঁড়ান তেল আমদানির ইস্যুতেও। তাঁর বক্তব্য, “ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেয়, তাহলে প্রায় ৯০০ থেকে ১০০০ কোটি ডলারের লোকসান হবে ভারতের। ভারতীয় জনগণ খুব ভালোভাবেই জানেন, তাঁদের নেতারা দেশের স্বার্থে কী সিদ্ধান্ত নেন। ভারতের নেতারা এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না, যা দেশের অপমান ডেকে আনে।” একইসঙ্গে পুতিন প্রতিশ্রুতি দেন, মার্কিন শুল্কের কারণে ভারতের যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করতে রাশিয়া ভারত থেকে আরও বেশি কৃষিপণ্য ও ওষুধ আমদানি করবে। পাশাপাশি আবারও মোদির (Narendra Modi) সাহসের ভূয়সী প্রশংসাও করেন।
আরও পড়ুন:বড় সিদ্ধান্ত! ফের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, কবে থেকে হচ্ছে লাগু?
এই ঘটনাপ্রবাহে স্পষ্ট, রাশিয়া ও ভারতের সম্পর্ক কেবল ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের নয়, বরং বর্তমান বিশ্বে পরিবর্তিত শক্তির ভারসাম্যের মধ্যেও একে অপরের প্রয়োজনীয় সহযোগী হয়ে উঠছে। মোদির (Narendra Modi) আমন্ত্রণে পুতিনের আগমন তাই শুধু কূটনৈতিক আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং দুই দেশের পারস্পরিক আস্থার নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।