বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারত (India) সফরে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী।বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে মুখোমুখি হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। বুধবার সকালে তাঁর বিশেষ বিমান মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানেই তাঁকে স্বাগত জানান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস, উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে, অজিত পওয়ার ও রাজ্যপাল আচার্য। এরপর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয় দুই রাষ্ট্রনায়কের বহু প্রতীক্ষিত সাক্ষাৎ। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মোদি ও স্টার্মারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিশেষ করে ২০৩৫ সালের রোডম্যাপকে সামনে রেখে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির পথ খোঁজা হয়।
আরও মজবুত ভারত (India)-ব্রিটেন সম্পর্ক:
স্টার্মারের এ সফরকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছরের জুনে লেবার পার্টি ১৪ বছর পর ব্রিটেনে ক্ষমতায় ফেরে। ৬৫০ আসনের হাউস অফ কমন্সে ৪১২ আসন জিতে স্টার্মার প্রধানমন্ত্রী হন। ফলাফল প্রকাশের পরই প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়ে ভারত সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই আমন্ত্রণের প্রতিক্রিয়াতেই এ বার ভারতে (India) এলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:সাংসদ-বিধায়কের উপর হামলার রেশ এবার আদালতে, NIA তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের
বুধবারই মোদি এক্স (X) হ্যান্ডলে স্টার্মারের সফরকে স্বাগত জানিয়ে লেখেন, “ব্রিটেনের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ঐতিহাসিক ভারত (India) সফরে আসা প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাই। পারস্পরিক উন্নতি ও সহযোগিতার শক্তিশালী ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে আগামিকালের বৈঠকের অপেক্ষায় আছি।” দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন চুক্তির সম্ভাবনাও আলোচনায় উঠে এসেছে বলে কূটনৈতিক সূত্রের খবর।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত জুলাইয়ে ভারত (India) ও ব্রিটেনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (Free Trade Agreement) স্বাক্ষরিত হয়। সেই ঐতিহাসিক চুক্তির পর এই প্রথমবার মুখোমুখি বৈঠক করলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। ফলে এই বৈঠকের গুরুত্ব স্বাভাবিকভাবেই বহুগুণ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে। পাশাপাশি, সবুজ শক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা ও স্টার্ট-আপ খাতে যৌথ বিনিয়োগের বিষয়ও আলোচনায় এসেছে।
আরও পড়ুন:উৎসবের মরশুমে ফের যাত্রী ভোগান্তি! খড়গপুর ডিভিশনে বাতিল হল আরও ১০ টি ট্রেন
স্টার্মারের সফরের রাজনৈতিক গুরুত্বও কম নয়। ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে অবস্থান এবং দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত গুরুত্বের প্রেক্ষিতে ভারত (India) এখন ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় অংশীদার। অন্যদিকে, মোদি সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ উদ্যোগে ব্রিটিশ বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে আগ্রহী নয়াদিল্লি। কূটনৈতিক মহলের ধারণা, এই সফরের মাধ্যমে ভারত-ব্রিটেন সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে, যা আগামী দশকে দুই দেশের অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষায় গভীর প্রভাব ফেলবে।