বাংলাহান্ট ডেস্ক: ছ’দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ভারতে (India) এলেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। প্রায় চার বছর আগে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছিল তালিবানরা। তার পর এই প্রথম ভারত সফরে এলেন তাদের বিদেশমন্ত্রী। কূটনৈতিক মহলে এই সফরকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সফরে মুত্তাকি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেই সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও তাঁর বৈঠকের কথা রয়েছে।
ভারত (India) সফরে তালিবান বিদেশমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লিতে পৌঁছে আফগান বিদেশমন্ত্রীকে স্বাগত জানায় ভারতের (India) বিদেশ মন্ত্রক। মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সমাজমাধ্যমে লেখেন, “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার জন্য আমরা মুখিয়ে রয়েছি।” জানা যাচ্ছে, সরকারি বৈঠক ছাড়াও মুত্তাকি তাজমহল এবং উত্তরপ্রদেশের ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ সফর করবেন।
আরও পড়ুন:মুম্বাইয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টার্মারের সঙ্গে বৈঠক মোদীর! কোন কোন বিষয়ে হল আলোচনা?
আসলে গত মাসেই তাঁর ভারত (India) সফর নির্ধারিত ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে ৯ থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে শিথিল করা হয়, যার ফলেই এই সফর সম্ভব হয়েছে। উল্লেখ্য, মুত্তাকিসহ সমস্ত শীর্ষ তালিবান নেতার বিদেশযাত্রার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমতি নিতে হয়।
তালিবান ক্ষমতা দখলের আগে আশরাফ গনির আমলে ভারত (India) ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক ছিল গভীর। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগ করেছিল ভারত। কিন্তু ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর গনি সরকারের পতন এবং তালিবানের প্রত্যাবর্তনের পর কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত থমকে যায়। যদিও এখনও পর্যন্ত ভারত তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবুও যোগাযোগের পথ পুরোপুরি বন্ধ রাখেনি।
চলতি বছরের গোড়াতেই দুবাইয়ে ভারতের (India) বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর সঙ্গে মুত্তাকির বৈঠক হয়। সেখানে তালিবান ভারতকে একটি “গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তি” বলে উল্লেখ করে। একইসঙ্গে ভারতও বারবার জোর দিয়েছে আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রতিশ্রুতি রক্ষার বিষয়ে।
তালিবান সরকারের সঙ্গে ভারতের (India) সাম্প্রতিক যোগাযোগের ধারাবাহিকতায় মুত্তাকির এই সফরকে কূটনৈতিক মহল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দেখছে। বিশেষ করে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর তালিবানের নিন্দা এবং পরে জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনালাপে সৌহার্দ্যপূর্ণ বার্তা বিনিময়ের পর এই সফর দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।