বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশের ভিতরেই আস্ত ‘শোরুম’ খুলে বসেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা। বুধবার এমনই কড়া ভাষায় মন্তব্য করল দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস (UNHCR)-এর ভূমিকাকে কার্যত টেনে এনে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট।
শরণার্থী সনদ নিয়ে বিতর্ক আদালতে
বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে চলছিল একটি মামলার শুনানি। অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ চেয়ে আবেদন করেন সুদানের নাগরিক ইয়াগৌব মহম্মদ। তাঁর দাবি, দিল্লিতে আফ্রিকার নাগরিকদের ধরপাকড় চলছে প্রবলভাবে, আর তাতেই আতঙ্কিত তিনি। আদালতে তাঁর সওয়ালকারী জানান, ইয়াগৌবের দুই সন্তান রয়েছে যাদের মধ্যে একটি সদ্যোজাত, মাত্র ৪০ দিনের। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন যদি পদক্ষেপ নেয়, তা হলে পরিবার চরম বিপাকে পড়বে বলেই যুক্তি দেন তিনি।
রাষ্ট্রপুঞ্জের শংসাপত্র নিয়েই কটাক্ষ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)
ইয়াগৌবের আইনজীবীর বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক দপ্তর ইতিমধ্যেই শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং শংসাপত্রও দিয়েছে। তাঁর দাবি, এই সনদ একদিনে পাওয়া যায় না দীর্ঘ প্রক্রিয়া পেরিয়ে, বহু বছর অপেক্ষার পরেই মেলে।
কিন্তু সেই বক্তব্য শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি সূর্য কান্ত। সরাসরি বলেন, “ওরা তো এখানে শোরুম খুলে বসেছে, যাকে-তাকে শংসাপত্র ধরিয়ে দিচ্ছে। তাই এই বিষয়ে বিশেষ কিছু বলব না।” পাশে বসে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী মন্তব্য করেন, “ভারত ১৯৫১ সালের রাষ্ট্রপুঞ্জ শরণার্থী বিষয়ক সভাকে স্বীকৃতি দেয়নি।”
উল্লেখ্য, ১৯৫১ সালের রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী চুক্তি স্বাক্ষর করেনি ভারত। সেই চুক্তির ভিত্তিতেই UNHCR বিভিন্ন দেশে শরণার্থী সনদকে বৈধতা দেয়। ফলে, ভারতের ক্ষেত্রে সেই শংসাপত্রের কোনও আইনি বৈধতা নেই বলেই জানায় আদালত (Supreme Court)।
অবশেষে, মামলাকারীর অন্তর্বর্তী আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত পরামর্শ দেয়, তিনি চাইলে অন্য কোনও দেশে আশ্রয়ের আবেদন করতে পারেন। আইনজীবীর দাবি অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় আবেদন করা হয়েছে, যা বর্তমানে বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কালীপুজোর পরেই শুরু SIR? কোলাঘাটে বৈঠকে বড় ইঙ্গিত দিল নির্বাচন কমিশন
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) এই মন্তব্য ঘিরে নয়া বিতর্ক শুরু হয়েছে আইনমহলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের শরণার্থী নীতিতে নতুন আলো ফেলল এই পর্যবেক্ষণ। এই ঘটনায় রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে নতুন করে।