আচমকাই বড় ঘোষণা! চিনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের, দিলেন যুক্তিও

Published on:

Published on:

America-China relations heat up again.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাণিজ্যযুদ্ধে ফের উত্তপ্ত আমেরিকা-চিন (America-China) সম্পর্ক। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিশ্ব বাণিজ্যে ঝড় তুললেন। শনিবার সমাজমাধ্যমে আকস্মিক এক ঘোষণায় তিনি জানিয়েছেন, চিনের সমস্ত পণ্যের উপর ১০০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। অর্থাৎ, এত দিন যেখানে চিনা পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ হারে মার্কিন শুল্ক নেওয়া হতো, এখন সেই পরিমাণ এক লাফে বেড়ে দাঁড়াবে ১৩০ শতাংশে। ট্রাম্পের এই ঘোষণা কার্যকর হবে আগামী ১ নভেম্বর থেকে। তবে প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেছেন, যদি চিন পাল্টা পদক্ষেপ নেয়, তা হলে এই শুল্ক নভেম্বরের আগেই কার্যকর হতে পারে।

ফের উত্তপ্ত আমেরিকা-চিন সম্পর্ক (America-China)

এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্ধারিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও চিনা (America-China) প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের বৈঠকও। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে তাঁদের দেখা করার কথা ছিল, কিন্তু ট্রাম্প নিজেই সেই বৈঠক বাতিল করেছেন। এই পদক্ষেপে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। হোয়াইট হাউসে ফের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্প বাণিজ্যনীতি ও শুল্ককে আন্তর্জাতিক কূটনীতির প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। এর আগে ভারত ও ব্রাজিলের পণ্যের উপরও তিনি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। কিন্তু এ বার চিনের উপর ১৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত মার্কিন ইতিহাসে নজিরবিহীন।

আরও পড়ুন:অভিনব স্টার্টআপেই ঘুরে গেল ভাগ্য! মিলছে ১.৫ কোটির টার্নওভার, কেরালার এই যুবক গড়লেন নজির

ট্রাম্প তাঁর ঘোষণায় দাবি করেছেন, চিন (America-China) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে “অস্বাভাবিক আগ্রাসী নীতি” নিচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, চিন সারা বিশ্বে তাদের বাণিজ্যিক অংশীদারদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বিরল খনিজ রফতানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা জানিয়েছে। ট্রাম্প লিখেছেন, “চিন ঘোষণা করেছে, ১ নভেম্বর থেকে তারা বিরল খনিজ ও গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের রফতানিতে সীমা টানবে। এই পদক্ষেপে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোনও দেশই এর বাইরে নয়।”

বিরল খনিজ বা রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস আধুনিক প্রযুক্তির মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচিত। স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক গাড়ি, সামরিক সরঞ্জাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি তৈরিতে এই খনিজের ব্যাপক প্রয়োজন। বিশ্বে এই সম্পদের অন্যতম প্রধান উৎস চিন। বেজিং যদি রফতানি সীমিত করে, তাহলে বৈশ্বিক উৎপাদন ও সরবরাহ শৃঙ্খলে বড় প্রভাব পড়বে, যা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতে, চিনের (America-China) এই “একচেটিয়া নীতি”র পাল্টা হিসেবেই তিনি এই কঠোর শুল্ক আরোপ করছেন। তাঁর বক্তব্য, “চিনের আচরণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নীতি লঙ্ঘন করছে। তারা বিশ্বকে জিম্মি করছে। আমেরিকা নীরব দর্শক হয়ে থাকবে না।” ট্রাম্প আরও ঘোষণা করেছেন, শুধু পণ্য নয়, ১ নভেম্বর থেকে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সফ্‌টওয়্যারের রফতানিতেও আমেরিকা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে।

America-China relations heat up again.

আরও পড়ুন:মঙ্গলবার থেকে শুরু বাজির বাজার, কোন কোন বাজি বিক্রি হবে? জানাল প্রশাসন

অর্থনীতিবিদদের মতে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়াবে। আমদানি নির্ভর মার্কিন সংস্থাগুলি বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে, কারণ চিন থেকে আনা পণ্যের দাম এখন দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যাবে। অন্যদিকে, চিনও (America-China) পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি আরও তীব্র হতে পারে।

ট্রাম্পের ভাষায়, “আমি ভাবতেই পারছি না চিন (America-China) এমন একটা পদক্ষেপ নিতে পারে, কিন্তু ওরা এটা করেছে—এবং বাকিটা ইতিহাস।” তাঁর এই মন্তব্যেই স্পষ্ট, মার্কিন-চিন বাণিজ্যযুদ্ধের নতুন অধ্যায় শুরু হয়ে গেল, যা শুধু দুই দেশের নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।