বাংলা হান্ট ডেস্ক: ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারের ভারত (India-Britain) সফরের সময়ে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় একটি নির্ণায়ক অগ্রগতি হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটেন ভারতের কাছে তাদের তৈরি লাইটওয়েট মাল্টি-রোল মিসাইল (LMM) ‘মার্টলেট’ সরবরাহ করবে বলে সমঝোতা করা হয়েছে। ব্রিটিশ নির্মাতা থ্যালেস এয়ার ডিফেন্সের এই ক্ষেপণাস্ত্রটি বহুমুখী ব্যবহার যোগ্য—এটির ‘গান-টু-এয়ার’, ‘এয়ার-টু-সারফেস’, ‘সারফেস-টু-এয়ার’ এবং ‘সারফেস-টু-সারফেস’ সব সংস্করণ রয়েছে।
ভারতকে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ দিচ্ছে ব্রিটেন (India-Britain)
ভারতের (India-Britain) প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন, ওই চুক্তি অনুযায়ী ভারতের স্থল, নৌ ও বায়ুসেনা—তিনই শাখা মার্টলেট ব্যবহার করতে পারবে। প্রাথমিকভাবে চুক্তির বরাতের পরিমাণ প্রায় ৩৫ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড ধরা হয়েছে, যা ভারতীয় মুদ্রায় আনুমানিক ৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকার সমান। মার্টলেট লেজার নির্দেশিত লক্ষ্যে অত্যন্ত নির্ভুল আঘাত করতে সক্ষম ও বহুমুখী অভিযানে কৌশলগত সুবিধা দেবে—বিশেষত হেলিকপ্টার, নৌ এবং বর্মীকৃত যানবাহনে এটিকে ব্যবহারযোগ্য করা আছে।
আরও পড়ুন:সাবধান! ট্রেনে এই জিনিসগুলি নিয়ে ওঠা একেবারে নিষিদ্ধ, অন্যথায় পড়বেন চরম বিপাকে
মার্টলেটের ভর প্রায় ১৩ কেজি এবং দৈর্ঘ্য সওয়া চার ফুট। এটি প্রায় ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যভেদ করতে পারে। ২০২১ সালে ব্রিটিশ (India-Britain) নৌবাহিনীতে প্রথম এ ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত হয় এবং পরবর্তীতে ব্রিটিশ বায়ুসেনার গানশিপ-হেলিকপ্টারেও এটি স্থাপন করা হয়। ইউক্রেনকে এর সরবরাহ পরবর্তীতে সমরাঙ্গণে কার্যকারিতার উদাহরণ দেখিয়েছে বলেই প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন—রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এটির ভূমিকা কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ব্রিটেন ও ইউক্রেনের পর ভারত তৃতীয় দেশ হিসেবে মার্টলেট ব্যবহারকারী তালিকায় আসছে, যা দিল্লি ও লন্ডনের কৌশলগত অংশিদারিত্বকে সামনে আনছে।
দুটি দেশের (India-Britain) প্রতিরক্ষা কূটনীতির ত্বরান্বিত প্রক্রিয়ায় এই অগ্রগতি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা। একদিকে ভারতীয় বাহিনীগুলোর মোবাইলিটি ও আঘাতদক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে, অন্যদিকে ব্রিটেন এমন হালকা ও বহুমুখী সমাধান দিতে পারায় চুক্তি দুই প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ভাগাভাগি ও যৌথ উৎপাদনের সম্ভাবনাও খুলে দিতে পারে। থ্যালেস ও ভারতীয় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভবিষ্যতে আরও অনুরূপ যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনার কথাও ব্রিটিশ-মধ্যস্থ বৈঠকে উঠেছে বলে সূত্রের দাবি।
আরও পড়ুন: জঙ্গি-দমন অভিযানে গিয়ে ভয়াবহ তুষারঝড়ের সম্মুখীন! কাশ্মীরে শহিদ বাংলার দুই জওয়ান
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, আনুষ্ঠানিক ক্রয়চুক্তি (Procurement Contract) ও প্রয়োজনীয় লাইসেন্সিং-নথিপত্র চূড়ান্ত হওয়ার পরে সরবরাহ ও ইন্টিগ্রেশনের সময়সূচি ঘোষণা করা হবে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেন, মার্টলেটেরই মতো হালকা ও বহুমুখী ক্ষেপণাস্ত্রের অন্তর্ভুক্তি বিশেষত হিমালয় অঞ্চলের উচ্চ-পরিবেশ ও উপকূলীয় অপারেশনে ভারতকে (India-Britain) দ্রুতগতির কৌশলগত সুবিধা নিতে সাহায্য করবে।
দুটি দেশের (India-Britain) মধ্যে সাম্প্রতিক উচ্চস্তরের বৈঠক ও প্রতিরক্ষা চুক্তি কেবল অস্ত্র সংগ্রহেই সীমাবদ্ধ নয়—এতে প্রযুক্তি স্থানান্তর, প্রস্তুতকারক শিল্পের অংশীদারিত্ব এবং মিলিটারি-টু-মিলিটারি পারস্পরিক সক্ষমতা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও অন্তর্ভুক্ত, যা ভবিষ্যতে ভারত-ইউকে প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রা দেবে।