বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উত্তরবঙ্গের বন্যা ও ভূমিধসে বিধ্বস্ত নাগরাকাটায় পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার সকালে অর্থাৎ উত্তরবঙ্গ সফরের দ্বিতীয় দিনে নাগরাকাটার ত্রাণ শিবিরে দুর্গতদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন তিনি। এছাড়া এদিন তিনি নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করলেন।
দুর্যোগে নিহতদের পরিবারকে চাকরি ও ক্ষতিপূরণ দিলেন মমতা (Mamata Banerjee)
প্রসঙ্গত, এর আগের বার ত্রাণ শিবিরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছিলেন বিপর্যয়ে নিহত ১০ জনের পরিবারের একজনকে চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। জানা যায়, এদিন সেই কথা মতো মুখ্যমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের হাতে হোমগার্ড পদে চাকরির নিয়োগপত্র এবং ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ তুলে দিয়েছেন। পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী নতুন ঘোষণা করেছেন যে, যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “জল একটু নামলেই আমরা সবার জন্য নতুন করে বাড়ি তৈরি করব। যে সেতুটা ভেঙে গিয়েছিল, সেটিও মেরামত করা হয়েছে। কৃষিজমি নষ্ট হয়ে গেলে রাজ্য সরকার বিমার ব্যবস্থা করবে, তাতে দুর্গতদের কোনও খরচ হবে না।”
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, যাদের নথিপত্র হারিয়েছে, রাজ্য সরকার পুনরায় সেগুলো তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে। এমনকি যাদের গবাদি পশু হারিয়ে গিয়েছে, তাঁরাও ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে জানিয়েছিলেন মমতা। এদিন ত্রাণ শিবিরে শিশু ও খুদে দুর্গতদের হাতে খেলনা ও উপহার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
দুর্যোগের কারণ হিসেবে ভুটানের জলকেই দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)
এরপরে বন্যা ও ভূমিধসের কারণ হিসেবে ভুটানের জলকেই দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। নাগরাকাটার ত্রাণ শিবির থেকে মমতা বলেন, “ভুটানের জলেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। আমরা বহুদিন ধরে ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠনের দাবি করে আসছি, যেখানে বাংলাকেও সদস্য করতে হবে।” মমতা আরও জানান, “আমাদের চাপে আগামী ১৬ অক্টোবর এই বিষয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। আমরা একজন অফিসার পাঠাব। শুধু তাই নয়, ভুটানের জলে এত ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণও দিতে হবে ওদের।” এছাড়া এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) কটাক্ষ করে বলেন, “সবটাই আমাদের করতে হয়। দিল্লি এক পয়সাও দেয় না। রাজ্য সরকারই মানুষকে সাহায্য করছে।”
আরও পড়ুনঃ ৬ বছরে একচুলও এগোয়নি তদন্ত, রাজীব কুমারের মামলার শুনানিতে আদালতে তোপের মুখে CBI
উত্তরবঙ্গ সফরে মোট পাঁচদিন থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। নাগরাকাটায় ত্রাণ শিবির পরিদর্শনের পাশাপাশি তিনি একাধিক বিপর্যস্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন। এছাড়া অনুষ্ঠিত হবে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকও। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, দুর্গত পরিবারগুলির জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা দ্রুত শেষ করতে হবে।