বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতায় বাণিজ্যিক গাড়ির বয়সসীমা সংক্রান্ত মামলার জট অবশেষে খুলল। বাস মালিকদের মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) জানিয়ে দিল, পনেরো বছর পার করলেই কোনও বাণিজ্যিক যান বাতিল করতে হবে, এই নিয়ম আর থাকছে না। তাই নির্দিষ্ট শর্ত মেনে পুরনো বাসও চলতে পারবে শহরের রাস্তায়। আদালতের এই নির্দেশে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে বাসমালিক মহল।
বছরে দু’বার বাধ্যতামূলক ফিটনেস সার্টিফিকেট, জানাল হাই কোর্ট (Calcutta High Court)
হাই কোর্টের (Calcutta High Court) তরফ নতুন ব্যবস্থায় স্পষ্ট বলা হয়েছে গাড়ির বয়স যতই হোক, তার উপযোগিতা যাচাই করতে বছরে দু’বার ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে হবে। পরীক্ষায় পাস করলেই মিলবে চলাচলের ছাড়পত্র। একইভাবে বছরে দু’বার দূষণ পরীক্ষা করানোও বাধ্যতামূলক বলে জানানো হয়েছে।
বাস মালিকরা বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন, শুধু বয়স দেখে গাড়ি বাতিল করলে ক্ষতি হবে। বরং গাড়ির ‘স্বাস্থ্য’ এবং দূষণের মাত্রা দেখে সিদ্ধান্ত হোক। সেই কারণেই তাঁরা প্রথমে পরিবহণ দপ্তরে আবেদন করেন, পরে হাই কোর্টে (Calcutta High Court) যান।
কলকাতায় দূষণ নিয়ন্ত্রণের কথা মাথায় রেখে আগে জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনাল (NGT) নির্দেশ দিয়েছিল যে বাণিজ্যিক গাড়ির বয়স ১৫ বছর হলেই তা বাতিল করতে হবে। ফলে বিপুল সংখ্যক বাস ও ট্যাক্সির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় বাস কমতে থাকে, সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও বাড়ে।
এই পরিস্থিতি তুলে ধরে বাস মালিকরা আদালতের (Calcutta High Court) কাছে আবেদন জানান বয়সসীমার কঠোর নিয়ম যাতে শিথিল করা হয়, তার জন্য। আদালত রাজ্য সরকারের মতামত জানতে চায়। রাজ্যও জানায়, শুধু বয়সের কারণে সমস্ত পুরনো বাস তুলে দিলে শহরের গণপরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকার বলে, গাড়ির চূড়ান্ত বয়স নির্ধারণ হবে কেবল তার ‘স্বাস্থ্য’ দেখে। আরও বলা হয়, প্রতি বছর দু’বার স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও দূষণ পরীক্ষায় পাস করলেই ১৫ বছরের বেশি পুরনো গাড়িও চলতে পারবে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হবে না এবং শহরের বাস সংকটও কমবে।

আরও পড়ুনঃ নিরাপত্তাকর্মী খাতে ৩২ লক্ষ বরাদ্দ, আসছে ৩০ প্রশিক্ষিত গার্ড, স্বস্তিতে যাদবপুর
হাই কোর্ট (Calcutta High Court) নির্দেশ প্রকাশের পর বাসমালিক সংগঠনগুলি সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, “বয়সসীমা রইল না। বাসগুলো আবার ফিরবে রাস্তায়।” সারা বাংলা বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চাইছিলাম স্বাস্থ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হোক। আদালতের নির্দেশকে স্বাগত।” জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোভিডের সময় দু’বছরের বেশি বাস বসে ছিল। বয়সসীমা তুলে দেওয়ায় আমরা খুশি।” আদালতের এই সিদ্ধান্তে কলকাতার বুকে গণপরিবহণ ব্যবস্থায় নতুন পর্বের সূচনা হল বলে মনে করছে পরিবহণ মহল।












