বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। রাজ্যে (West Bengal) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। মূলত, যেহেতু স্কুল শিক্ষা দপ্তর উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ দেখাতে পারেনি সেই কারণে ২০১৬ সালের সমগ্র প্যানেলটিকেই বাতিল করা হয়। এদিকে, আদালতের এই রায়কে ঘিরে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিতর্কের আবহ তৈরি হলেও এবার চরম সমস্যায় পড়েছে রাজ্যের একটি স্কুল।
কারণ, ওই প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন ফরাক্কা থানার অর্জুনপুর হাইস্কুলের ৩৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। যাঁদের মধ্যে ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন এবং বাকি ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা মিউচুয়াল ট্রান্সফার নেওয়ার মাধ্যমে ওই স্কুলে আসেন। তবে, আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে এক ধাক্কায় কমে গেল ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা।
এমতাবস্থায়, পঠন-পাঠন কিভাবে পরিচালনা হবে এই বিষয়ে চিন্তায় পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ওই বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ৬০ জন। পাশাপাশি পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন ৭ জন। কিন্তু, এবার ৩৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বাদ পড়ায় তৈরি হয়েছে সঙ্কট। এদিকে, ফারাক্কার অর্জুনপুর হাইস্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। তাই, এই বিপুলসংখ্যক পড়ুয়ার পঠন পাঠন কিভাবে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। এমতাবস্থায়, মুর্শিদাবাদের এই স্কুলের ঘটনা জানাজানি হতেই স্বাভাবিকভাবেই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
আরও পড়ুন: নিজে তো ডুববেই সাথে এই পাঁচ দলকেও ডোবাবে RCB
এই প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সোহরাব আলি কার্যত নিরুপায় হয়ে জানিয়েছেন যে, “এতজন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি একসাথে চলে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই স্কুল চালাতে সমস্যায় হবে। আমাদের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দশ হাজারের বেশি পড়ুয়া রয়েছে। তাই, এত কম সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে স্কুল চালানো সম্ভব নয়।” পাশাপাশি, স্কুলে এমন সঙ্কট নেমে আসায় সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবক-অভিভাবিকারাও।
আরও পড়ুন: লটারি লাগল ভিখারি পাকিস্তানের, খোঁজ মিলল বিপুল খাজনার, এবার খুলতে পারে ভাগ্য
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে এসএসসি-র তরফে। শুধু তাই নয়, চাকরিপ্রার্থীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এমতাবস্থায়, শেষ পর্যন্ত যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন তাঁদের ভাগ্য কোনদিকে ঘোরে সেটাই এখন দেখার বিষয়।