বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভোটার তালিকা সংশোধন অর্থাৎ এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে বাড়তি সতর্ক হল নির্বাচন কমিশন। শুনানির সময় কোনও ভুল যেন না হয়, তার জন্য কমিশন নতুন করে নজরদারির ব্যবস্থা করছে। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় অবজার্ভারের পাশাপাশি এবার মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বা সিইও-কে চিঠি পাঠিয়ে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কী বলা হয়েছে কমিশনের নির্দেশিকায় (SIR)?
কমিশনের নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তর বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার আধিকারিকদেরই মাইক্রো অবজার্ভার হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। চলতি মাসের ১২ তারিখে এই বিষয়ে দিল্লিতে কমিশনকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। শুক্রবার সেই প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় কমিশন। এই সিদ্ধান্তের পর রাজ্যে ৩০০০-রও বেশি মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুনানির সময় প্রতি কক্ষে একজন করে মাইক্রো অবজার্ভার থাকবেন।
মাইক্রো অবজার্ভারদের মূল কাজ কী?
মাইক্রো অবজার্ভারদের মূল কাজ হবে শুনানি চলাকালীন ERO ও ARO-দের কাজ ঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা দেখা। পাশাপাশি তাঁরা এনুমারেশন ফর্ম, জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র এবং শুনানিতে আসা ভোটারদের জমা দেওয়া বিভিন্ন নথি যাচাই করবেন। ভোটার তালিকায় কোনও গরমিল থাকলে তা চিহ্নিত করা এবং প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ করাও তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে।
সব মিলিয়ে, শুনানি কক্ষে নির্বাচন কমিশনের ‘চোখ ও কান’ হিসেবেই কাজ করবেন মাইক্রো অবজার্ভাররা। তাঁদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব থাকবে সিইও দপ্তরের উপর। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সিইও-র অধীনেই কাজ করবেন। পারিশ্রমিক হিসেবে এককালীন ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
তবে নতুন কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হলেও, শুনানি কবে শুরু হবে, তা এখনও স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি কমিশন। সূত্রের খবর, শুনানির জন্য একটি বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। সেই কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও শুনানির পদ্ধতি চূড়ান্ত হয়নি। শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মও এখনও পাঠানো হয়নি। কমিশনের আধিকারিকদের ধারণা, আগামী ২৬ বা ২৭ তারিখ থেকে শুনানি শুরু হতে পারে। উল্লেখ্য, বাংলা ছাড়া দেশের আর কোনও রাজ্যে এইভাবে মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগ করা হচ্ছে না। এমনকি বিহারেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবুও শুনানির নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনও জানাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।

আরও পড়ুনঃ মাঠজুড়ে টোটো, বঙ্গে মোদী সফরের আগেই গেরুয়া পতাকা তুলে ‘দলবদলের ডাক’ টোটোচালকদের
এরই মধ্যে SIR সংক্রান্ত কাজের চাপ নিয়ে উদ্বেগজনক ঘটনাও সামনে এসেছে। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় কাজের চাপে মৃত্যু হয়েছে প্রভাসকুমার দাস (৫৮) নামে এক বিএলও-র। পরিবারের অভিযোগ, প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও রাত জেগে SIR-এর কাজ করার চাপেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাঁর মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, ডায়মন্ড হারবারের কালীচরণপুরে তপন মণ্ডল নামে এক বিএলও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তবে স্ত্রীর তৎপরতায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।












