ভারতের এই পড়শি দেশকে ফের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় ব্রিটিশরা? উঠছে প্রশ্ন

Published on:

Published on:

Do the United Kingdom want to take back control of this country?
Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: মায়ানমারের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে ব্রিটেন (United Kingdom)? ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে গভীর অস্থিরতা ও গণতান্ত্রিক সংকটে নিমজ্জিত মায়ানমারে চলছে অবিরাম সংঘাত। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকেই দেশটিতে সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন বেসামরিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে দৈনন্দিন সংঘর্ষ, বিমান হামলা ও দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছে এবং অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে।

মায়ানমারকে ফের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় ব্রিটেন (United Kingdom)?

এই সংকটে ব্রিটেনের বাড়ন্ত সক্রিয়তা নতুন করে আন্তর্জাতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মায়ানমারের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ সম্প্রতি স্পষ্ট করে বলেছেন, এই ইস্যুতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার অবস্থানে রয়েছে ব্রিটেন। এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, একসময়কার ঔপনিবেশিক শাসক ব্রিটেন কি ফের মায়ানমারে নিজস্ব প্রভাব বিস্তারের কৌশলগত পদক্ষেপ নিচ্ছে, নাকি প্রকৃতপক্ষেই মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার ভূমিকায় রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘কাঙাল’ পাকিস্তান তলিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে! দেশ ছাড়ছেন হাজার হাজার ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার

এমন পরিস্থিতিতে মায়ানমারের সামরিক প্রশাসন আগামী ডিসেম্বরে একটি সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে, যার প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ নির্ধারিত হয়েছে ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে। তবে জাতিসংঘ ও একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এই নির্বাচনকে ইতিমধ্যেই ‘ভুয়ো ও প্রতারণামূলক’ আখ্যা দিয়েছে। বাস্তবতা হলো, দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকায় কোনো ভোটই হবে না; ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে ভোটার তালিকা তৈরি হয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলিমসহ লক্ষাধিক নাগরিককে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, ৪০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নির্বাচনের সমালোচনাও দমন করা হচ্ছে।

ব্রিটেন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে বর্তমান পরিস্থিতিতে মায়ানমারে কোনো ধরনের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এই বিষয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে কূটনৈতিক সম্পর্ক কঠোর করা, অস্ত্র ও বিমান জ্বালানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় কার্যকর করার চাপ সৃষ্টি করা।

Do the United Kingdom want to take back control of this country?
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার

আরও পড়ুন:ধনকুবের হয়েও সাধারণ জীবন! অবলীলায় দান করেছেন ৬,২১০ কোটি, চমকে দেবে ত্যাগরাজনের কাহিনি

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, মায়ানমারে প্রায় ২ কোটি ১৯ লাখ মানুষ তীব্র মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল, ৩৬ লাখের বেশি মানুষ দেশের ভেতরেই ঘরছাড়া এবং সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৬,০০০-এরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ব্রিটেন চলতি অর্থবছরে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেও স্বীকার করেছে যে সহায়তা সংস্থাগুলির এসব এলাকায় প্রবেশাধিকার সীমিত হওয়ায় এর প্রভাব খুবই কম। সামগ্রিকভাবে, মায়ানমারের ভবিষ্যৎ এখনও অন্ধকারে ঢাকা, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা এই সঙ্কট সমাধানে ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে।