বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশজুড়ে বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা মামলার পাহাড় এবং দীর্ঘ শুনানির অভিযোগ নতুন নয়। বিচার পেতে দেরি হওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আদালতের কাজকে আরও দ্রুত ও গুছিয়ে তুলতে বড় পদক্ষেপ নিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি (CJI) এবং অন্যান্য বিচারপতিদের নির্দেশে মামলার শুনানি সংক্রান্ত একগুচ্ছ নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।
আদালতের (Supreme Court) সময় বাঁচাতে নতুন কার্যপ্রণালী
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) জারি করা এই নতুন ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ বা SOP-র মূল লক্ষ্য হল আদালতের মূল্যবান সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি। দীর্ঘদিন ধরে চলা অনির্দিষ্ট শুনানি ও অপ্রয়োজনীয় সময়ক্ষেপণ বন্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
আইনজীবীদের জন্য কড়া নিয়ম
নতুন নির্দেশিকায় আইনজীবীদের দায়িত্ব ও সময়সচেতনতার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। আদালতের কার্যক্রমকে আরও মসৃণ করতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেগুলি হল –
মৌখিক যুক্তিতর্কের সময় বেঁধে দেওয়া : এবার থেকে আর ইচ্ছেমতো দীর্ঘ সময় ধরে সওয়াল-জবাব চলবে না। সমস্ত সিনিয়র অ্যাডভোকেট এবং অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডদের (AoR) মামলার শুনানির অন্তত এক দিন আগে জানাতে হবে, তাঁরা মৌখিক যুক্তিতর্কের জন্য কতটা সময় নেবেন। এই নিয়ম ‘পোস্ট নোটিস’ এবং ‘রেগুলার হিয়ারিং’, সব ক্ষেত্রেই বাধ্যতামূলক।
অনলাইনেই জানাতে হবে সময়সীমা : শুধু মুখে বলে দিলেই হবে না। আইনজীবীদের নির্দিষ্ট অনলাইন পোর্টাল অথবা অ্যাপিয়ারেন্স স্লিপের মাধ্যমে যুক্তিতর্কের সময়সীমা জমা দিতে হবে। এর ফলে পুরো প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও ডিজিটালভাবে নজরদারির আওতায় থাকবে।
লিখিত নোট জমা বাধ্যতামূলক : মামলার মূল বিষয় যাতে স্পষ্ট থাকে, তার জন্য আর্গুইং কাউন্সিল বা সিনিয়র অ্যাডভোকেটদের একটি সংক্ষিপ্ত লিখিত নোট জমা দিতে হবে। এই নোট কোনওভাবেই ৫ পাতার বেশি হতে পারবে না। উদ্দেশ্য একটাই—অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দিয়ে মূল বিষয়ের উপর জোর দেওয়া।
আগেই দিতে হবে নোটের কপি : শুনানির অন্তত ৩ দিন আগে এই লিখিত নোট আদালতে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, প্রতিপক্ষকেও ওই নোটের একটি কপি দিতে হবে, যাতে দুই পক্ষই প্রস্তুত থাকতে পারে।
সময় মানতেই হবে : আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, শুধু সময় জানালেই চলবে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আইনজীবীদের তাঁদের বক্তব্য শেষ করতে হবে। এই বিষয়ে কোনও রকম শিথিলতা দেখানো হবে না বলেও জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন ইমন? জল্পনায় এবার মুখ খুললেন নায়িকা, বললেন, ভালবাসা…
কী প্রভাব পড়তে পারে বিচার ব্যবস্থায়?
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) এই সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে আদালতের সময় বাঁচবে। একই দিনে বেশি মামলার শুনানি সম্ভব হবে। ফলে মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমবে এবং সাধারণ মানুষ দ্রুত বিচার পাওয়ার আশা করতে পারেন।












