বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিগত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে (Bangladesh) ভারতবিরোধী সুর ক্রমেই চড়ছে। একদিকে ভারতের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে বয়কটের ডাক, অন্যদিকে বাস্তব প্রয়োজনে ফের ভারতের দিকেই ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছে ঢাকা। হাদি অনুসারীদের একাংশ ইউনুস সরকারের কাছে দাবি তুলেছে, ভারতীয় নাগরিকদের ওয়ার্ক পারমিট না দেওয়া হোক এবং ভারতীয় পণ্য বর্জন করা হোক। কিন্তু এই উত্তেজনাপূর্ণ আবহের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জোগান বজায় রাখতে ভারত ছাড়া বাংলাদেশের বিকল্প খুবই সীমিত।
ফের ভারত থেকে ৫০,০০০ টন চাল কিনবে বাংলাদেশ (Bangladesh):
এরই মধ্যে খাদ্যশস্যের জোগান নিশ্চিত করতে ফের ভারতের উপর নির্ভরতা বাড়িয়েছে ইউনুস সরকার। কয়েকদিন আগেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সামাল দিতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে বাধ্য হয় ঢাকা। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার চাল আমদানির ক্ষেত্রে ফের বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এক সপ্তাহ আগেই ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, এবার আরও ৫০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দিল অন্তর্বর্তী সরকার।
জানা গিয়েছে, এর আগে ভারত থেকে প্রতি কেজি ৪৩ টাকা ৫১ পয়সা দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এবার নতুন করে প্রতি কেজি ৪৪ টাকা ১ পয়সা দরে নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই দ্রুত এই আমদানির পথে হাঁটছে সরকার।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, ভারতের বগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৯ দশমিক ৭৭ মার্কিন ডলার দরে চাল কেনা হবে। মোট ৫০ হাজার টন চালের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২২০ কোটি ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২০৫ টাকা। নির্বাচনের আগে খাদ্যশস্যের ঘাটতি এড়াতে এবং বাজার স্থিতিশীল রাখতে এই সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে প্রশাসন।

আরও পড়ুন:পাকিস্তান সহ ৭ দেশে নিষিদ্ধ ‘ধুরন্ধর’, ৯০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে রণবীরের ছবি
এর পাশাপাশি পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রেও ভারতের উপর ফের ভরসা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। সম্প্রতি ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে দেড় হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫০ টাকা ছুঁয়ে যাওয়ায় ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে সরকার। পাকিস্তান, চিন ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের আগে অগ্নিমূল্য সামাল দিতে ভারত থেকেই পেঁয়াজ ও চাল আনতে বাধ্য হচ্ছে ইউনুস সরকার, যা ভারত ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তবতা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।












