বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যপালের (Governor C V Ananda Bose) বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি,কুপ্রস্তাব এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। সম্প্রতি বঙ্গ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রাজভবনেরই এক অস্থায়ী স্টাফ। গত বৃহস্পতিবার রাতে হেয়ার স্ট্রিট থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। তার সঙ্গে কবে কী হয়েছে, সেই বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন তিনি। এরপরই শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে।
রাজভবনের ওই মহিলা কর্মীর অভিযোগ, তার দুবার শ্লীলতাহানি করেন রাজ্যপাল সিভি বোস। এরপরই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগের তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। যদিও আগেই রাজভবন তরফে এক বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্ত করার এক্তিয়ার পুলিশের নেই। শুধু তাই নয়, সংবিধানের প্রসঙ্গ তুলে রাজভবনের কর্মীদের এই ঘটনা প্রসঙ্গে কোথাও বিবৃতি দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন খোদ রাজ্যপাল।
বিতর্ক বাড়তে বৃহস্পতিবার ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এনেছে রাজভবন। যদিও তাতে রাজভবনের কক্ষের কোনও ফুটেজ নেই। যা নিয়ে আরও জোরদার বিতর্কে নেমেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এরই মাঝে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) । দোষ প্রামানিত না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও রকম মন্তব্য না করার আর্জি জানিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন এক আইনজীবী।
সূত্রের খবর, এদিন মামলা দায়ের করেন আইনজীবী তাীর্থঙ্কর দে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা করা হয়েছে। মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আবেদনে আইনজীবি দে জানিয়েছেন, “রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান। ইতিমধ্যেই তিনি নিজেও বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘চক্রান্ত করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে এর পেছনে। তাই দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধ মন্তব্য বন্ধ করা জরুরি।” আগামী মঙ্গলবার মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন: ‘৯১৫০০৫৬৬১৮’, বিরাট পদক্ষেপ স্বয়ং মোদীর! SSC মামলায় নয়া মোড়?
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে জেনে দুদিন আগেই রাজভবনের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি বিবৃতি জারি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস লিখেছিলেন, ”সংবিধানের ৩৬১ (২), (৩) ধারা অনুযায়ী, কোনও রাজ্যপাল নিজের পদে থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে দেশের কোনও আদালতে ফৌজদারি তদন্তপ্রক্রিয়া, তাকে গ্রেফতার করা বা জেলে পাঠানোও এই কোনও কিছুরই এক্তিয়ার নেই পুলিশের। ফলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যক্রম এগোতে পারবে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ সংবিধানের রক্ষাকবচ থাকায় পুলিশের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্তের এক্তিয়ার নেই। তাদের এই তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট কোনও আদালতে গৃহীত হতে পারে না। কারণ তা সংবিধানের অবমাননা। সংবিধানে পুলিশকে এ বিষয়ে কোনও এফআইআর করে তদন্ত করতেই নিষেধ করা হয়েছে।” পাশাপাশি রাজভবনের স্থায়ী, অস্থায়ী, আংশিক সময়ের কর্মীরা কেউ অনলাইন বা অফলাইন মাধ্যমে, ফোনে বা অন্য কোনও ভাবে এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে পারবেন না বলেও নির্দেশ সামনে আনে রাজভবন।