বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ নামে অনেকে চেনেন তাঁকে। এবার সেই বাদশার সম্পত্তির পরিমাণ সামনে আনল ইডি (Enforcement Directorate)। সোমবার আদালতে সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) বিরুদ্ধে ১১৩ পাতার একটি চার্জশিট জমা করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তদন্তের ৫৬ দিনের মাথায় এই প্রথম শাহজাহানের সম্পত্তি সংক্রান্ত চার্জশিট দিল তদন্তকারী সংস্থা। সেখানে সন্দেশখালির ‘বাঘে’র সম্পত্তির পরিমাণ উল্লেখ করেছে তারা।
ED সূত্রে জানা যাচ্ছে, এখনও অবধি শাহজাহানের ২৬১ কোটি টাকার সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। কীভাবে এত টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন তিনি? সেই বিষয়েও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে বলে খবর। কেন্দ্রীয় এজেন্সির একটি সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, প্রধানত পাঁচটি উপায়ে ‘কোটিপতি’ হয়েছিলেন তিনি।
এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে চিংড়ির ব্যবসা। এই ব্যবসা করেই ফুলেফেঁপে উঠেছিলেন শাহজাহান। মূলত চিংড়ি আমদানি-রফতানির এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন তিনি। এর মাধ্যমেই প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছিলেন সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ‘বাঘ’। এছাড়া ED সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইট ভাটা থেকেও মোটা টাকা আয় ছিল শাহজাহানের। এর মাঝেই প্রায় ২০ কোটির সম্পত্তি করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ভোটের মধ্যে বাংলায় ফের ED অভিযান! এবার স্ক্যানারে কে? ফাঁস নাম-পরিচয়
শাহজাহানের বিরুদ্ধে গায়ের জোরে জমি, ভেড়ি দখলের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। তবে শুধু সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। বলপূর্বক ইটভাটার মালিকানাও ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। যে ব্যক্তির থেকে মালিকানা ছিনিয়েছিলেন, বর্তমানে তিনিই সেই ভাটায় ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন বলে ED সূত্রে খবর।
সরকারি টেন্ডার এবং তোলাবাজি থেকেও কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি করেছিলেন সন্দেশখালির এই বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা। বন্দুক দেখিয়ে, খুনের হুমকি দিয়ে প্রচুর টাকা আদায় করেছেন শাহজাহান। সেই সঙ্গেই সরকারি টেন্ডার থেকেও প্রচুর টাকা কামিয়েছেন! এই টেন্ডারগুলি কিছুতেই হাতের বাইরে যেতে দিতেন না তিনি। ভাই শেখ আলমগিরের নাম টেন্ডার নিতেন বলে দাবি করেছে ED। এর মাঝেই প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছিলেন সন্দেশখালির ‘বাঘ’।
শাহজাহানের সম্পত্তির পঞ্চম এবং অন্যতম একটি উৎস হল মাছের আড়ত। ED সূত্রে খবর, এর মাধ্যমে প্রায় ৮ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছিলেন তিনি। তদন্তকারী সংস্থার অনুমান, জমি দখল করে যে বিপুল সম্পত্তি তৈরি করেছিলেন শাহজাহান, নানান ব্যবসায় তা লাগিয়ে ‘সাদা’ করতেন। গতকাল জমা দেওয়া ED-র চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, প্রায় ১১৮ বিঘা জমি দখল করেছেন সন্দেশখালির এই বহিষ্কৃত নেতা। তবে সেই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে আলমগির, শিবপ্রসাদ হাজরা, দিদারবক্স মোল্লার নাম রয়েছে। সেই সঙ্গেই জমি দখল মামলায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া ED-র চার্জশিটে তাঁর সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যোগের কথা উল্লেখ রয়েছে বলে খবর।