কোহিনুরের চেয়েও বড় এই হিরেই বাঁচিয়েছিল টাটার কোম্পানিকে, পুরো ঘটনা জানলে ভিজবে চোখ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের (India) নারী স্বাধীনতার একজন অন্যতম আইকন হিসেবে বিবেচিত হন লেডি মেহেরবাই টাটা (Lady Meherbai Tata)। তাঁর একাধিক প্রভাবশালী কাজ তাঁকে আলাদা পরিচয় এনে দিয়েছে। হরিশ ভাট তাঁর “টাটা স্টোরিজ” বইতে বলেছেন যে কিভাবে লেডি মেহেরবাই টাটা আর্থিক সঙ্কটের সময় টাটা গ্রুপের (Tata Group) কোম্পানি টাটা স্টিলকে (Tata Steel) বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, জামশেদজি টাটার বড় ছেলে স্যার দোরাবজি টাটা ২৪৫.৩৫ ক্যারেটের জুবিলি ডায়মন্ড কিনেছিলেন। এই হিরেটি কোহিনুরের চেয়ে দ্বিগুণ বড় ছিল। তিনি ১৯ দশকের প্রথম দিকে লন্ডনের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ১,০০,০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে তাঁর স্ত্রী লেডি মেহেরবাইয়ের জন্য এটি কিনেছিলেন।

এইভাবে বিপদের হাত থেকে উদ্ধার পায় টাটার (Tata Group) কোম্পানি:

টাটা স্টিল ১৯২৪ সালে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়: এদিকে লেডি মেহেরবাই ওই হিরেটিকে প্ল্যাটিনাম চেইনের সাথে যুক্ত করে নিজের কাছে রাখেন। কিন্তু ১৯২৪ সালে, টাটা স্টিল বিশাল আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। এমনকি সামগ্রিক অবস্থা এতটাই বেগতিক হয়ে গিয়েছিল যে ওই সংস্থা তার কর্মীদের বেতন প্রদান করতেও অসুবিধার সম্মুখীন হয়। সেই কঠিন সময়ে লেডি মেহেরবাই এবং স্যার দোরাবজি টাটা ওই কোম্পানিকে বাঁচাতে একটি বড় সিদ্ধান্ত নেন। জুবিলি ডায়মন্ড সহ তাঁরা তাঁদের সমস্ত টাকা ব্যাঙ্কে বন্ধক রেখে টাটা স্টিলের জন্য ঋণ নিয়েছিলেন। তাঁদের এই ত্যাগ স্বীকার কাজে আসে এবং সংস্থাটি দ্রুত মুনাফা অর্জন করতে শুরু করে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই কঠিন সময়েও সংস্থার (Tata Group) কোনও কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি।

This diamond, bigger than Kohinoor, saved Tata's company.

জুবিলি হিরে বিক্রি করে স্যার দোরাবজি টাটা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠা: টাটা গ্রুপের (Tata Group) মতে, স্যার দোরাবজি টাটার মৃত্যুর পর, জুবিলি হিরে বিক্রি করে স্যার দোরাবজি টাটা ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জানিয়ে রাখি, লেডি মেহেরবাই টাটা ১৯২৯ সালে পাস করা “শারদা আইন” বা “বাল্য বিবাহ নিষেধাজ্ঞা আইন” খসড়া তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ভারতে এবং বিদেশেও এটিকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছিলেন। এছাড়াও, তিনি জাতীয় মহিলা পরিষদ এবং সর্বভারতীয় মহিলা সম্মেলনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

আরও পড়ুন: অবাক পুরো বিশ্ববাসী! নতুন রেকর্ড গড়ে চমকে দিল কলকাতা

লেডি মেহেরবাই টাটা সবসময় নারী অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন। তিনি ১৯২৭ সালে আমেরিকার মিচিগানে হিন্দু বিবাহ আইনের সমর্থনে এবং ১৯৩০ সালে সর্বভারতীয় মহিলা সম্মেলনে রাজনীতিতে মহিলাদের সমান অধিকারের দাবিতে আওয়াজ তুলেছিলেন।

আরও পড়ুন: ঝড় তুলল টাটা গ্রুপের এই কোম্পানি! ১ সপ্তাহে কামিয়ে নিল ৩৮,০০০ কোটি, নাম জানলে আপনিও হবেন অবাক

তবে, এই লড়াইয়ে তিনি একা ছিলেন না। ১৯২১ সালে, লন্ডনের “ইন্টারন্যাশনাল উইমেন সাফ্রেজ নিউজ” সংবাদে প্রকাশ করে যে বোম্বাইয়ের আইন পরিষদ মহিলাদের ভোটাধিকারের সমর্থনে একটি প্রস্তাব পাস করে। ওই সংবাদে বোম্বের উইলসন কলেজ হলে অনুষ্ঠিত একটি বড় সভারও উল্লেখ ছিল। যেটির সভাপতিত্ব করেছিলেন লেডি টাটা। ওই বৈঠকে বোম্বের মহিলাদের ভোটাধিকারের প্রসঙ্গে দাবি তোলা হয়।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর