বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে দেশকে (India) সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে একের পর এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ভারত (India) এবারে তার Sukhoi-30MKI ফাইটার জেটকে আরও শক্তিশালী করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমতাবস্থায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ৮৪ টি সুখোই জেটের প্রথম ব্যাচ আপগ্রেড করার জন্য প্রায় ৬৩,০০০ কোটি টাকার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ভারত (India) নিচ্ছে বড় পদক্ষেপ:
সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই আপগ্রেডের পরে, এই সুখোই জেটগুলি আগামী ৩০ বছরের জন্য আকাশে শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম হবে। এদিকে এই আপগ্রেডে, সুখোই জেটে উন্নত রাডার এবং অ্যাডভান্স ইলেকট্রনিক্স, দূরপাল্লার অস্ত্র এবং মাল্টি-সেন্সর ফিউশনের মতো একাধিক বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হবে। এরপর এই সুখোই জেটগুলি পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার প্লেনের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে। একটি সূত্র জানিয়েছে, “এই আপগ্রেড করা সুখোই জেটগুলি ২০৫৫ সাল পর্যন্ত উড়তে থাকবে।”
আপগ্রেড করা কেন প্রয়োজন : জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে মাত্র ৩০ টি ফাইটার স্কোয়াড্রন রয়েছে। যেখানে চিন ও পাকিস্তান উভয়ের সাথে মোকাবিলা করতে ৪২ টি স্কোয়াড্রনের প্রয়োজন। প্রতিটি স্কোয়াড্রনে ১৬ থেকে ১৮ টি জেট রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই সুখোই জেটগুলিকে আপগ্রেড করা খুবই প্রয়োজনীয়। হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) আগামী ১৫ বছরে এই ৮৪ টি সুখোই জেটকে আপগ্রেড করবে। CCS-এর কাজ থেকে অনুমোদন পেলে এগুলির ডিজাইন এবং বিকাশের ক্ষেত্রে ৭ বছর সময় লাগবে। এরপর জেটগুলিকে ব্যাচে আপগ্রেড করে বিমান বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ভারতের কাছে রয়েছে ২৫৯ টি সুখোই জেট: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারতের (India) কাছে বর্তমানে ৩৫৯ টি সুখোই জেট রয়েছে। এই জেটগুলির বেশিরভাগই রাশিয়ার লাইসেন্সের অধীনে HAL দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, দুর্ঘটনাগ্রস্থ জেটগুলির ক্ষতিপূরণের ১১,৫০০ কোটি টাকায় ১২ টি নতুন সুখোই জেট এবং তাদের সরঞ্জাম কেনা হচ্ছে। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, “আগামী ১৫ বছরে, ভারতের নিজস্ব পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট AMCA (Advanced Medium Combat Aircraft) থাকবে। এর প্রযুক্তি সুখোই জেটগুলিতে ব্যবহার করা হবে। যা প্রথম ৮৪ টি জেটের পরে আপগ্রেড করা বাকি জেটগুলির ক্ষেত্রে উপলব্ধ করা হবে।
সুখোইয়ে বসানো হবে দেশীয় রাডার: এই আপগ্রেডে, সুখোই জেটে দেশীয় “বিরূপাক্ষ” AESA রাডার স্থাপন করা হবে। যা বর্তমান রাডারের চেয়ে ১.৫ থেকে ১.৭ গুণ বেশি দূরত্বে শত্রুপক্ষের বিমান শনাক্ত করতে সক্ষম হবে। এর পাশাপাশি জেটে Astra-3 দূরপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার মিসাইলও বসানো হবে। যা ৩৫০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে পারে। বায়ুসেনা বর্তমানে ১০০ কিলোমিটার রেঞ্জের Astra-1 ক্ষেপণাস্ত্র যোগ করছে। অপরদিকে, DRDO ১৬০ কিলোমিটার রেঞ্জের Astra-2 ক্ষেপণাস্ত্র এবং সলিড ফুয়েল ডাক্টেড রামজেট প্রোপালশন সহ Astra-3 ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: ছবিটি সুন্দর! কিন্তু রয়েছে মস্ত বড় ভুল, ১১ সেকেন্ডের মধ্যে খুঁজে পেলেই আপনি নিঃসন্দেহে জিনিয়াস
একটি সূত্র জানিয়েছে, “ফ্লাই-বাই-ওয়্যার সিস্টেম বাদে, আপগ্রেড করা সুখোই জেটের সমস্ত ইলেকট্রনিক্স দেশীয় হবে। এতে উন্নত অ্যালগরিদম সহ তিনটি মিশন কম্পিউটার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, আপগ্রেড করা ৫১ টি সিস্টেমের মধ্যে ৩০ টি HAL, ১৩ টি DRDO এবং ৮ টি প্রাইভেট সেক্টর দ্বারা নির্মিত হবে।” উল্লেখ্য যে, বর্তমানে, ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল বহনের জন্য ৪০ টি সুখোই জেটকে আপগ্রেড করা হয়েছে। এদিকে ব্রহ্মোসের রেঞ্জ ইতিমধ্যেই ২৯০ থেকে ৪৫০ কিলোমিটারে বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং শীঘ্রই এর ৮০০ কিলোমিটারের ভার্সনও অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে।