বিশেষভাবে সক্ষম দুই কন্যার বাবা! প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির জীবন হার মানাবে সিনেমার গল্পকে  

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সদ্য অবসর নিয়েছেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud)। দীর্ঘদিনের পেশাগত জীবনে বিচারপতি হিসেবে দারুণ সফল তিনি। কেউ কেউ তাঁকে ‘রকস্টার প্রধান বিচারপতি’ বলেও আখ্যা দিয়ে থাকেন। নাম-যশ-প্রভাব-প্রতিপত্তি কোনো কিছুরই অভাব নেই তাঁর। রয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি।

প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের (DY Chandrachud) ব্যক্তিগত জীবনের অজানা কাহিনী

তাঁর (DY Chandrachud) জীবনের ডিকশনারিতে ‘অভাব’ শব্দটা নেই বললেই চলে। তার কিন্তু এই সদাহাস্য মুখের আড়ালেই প্রধান বিচারপতির জীবনে রয়েছে নানান অজানা কাহিনী, অনেক না বলা কথা। যা একসময় তাঁকে  ক্ষতবিক্ষত করেছে। এতদিনে সকলেই জেনে গিয়েছেন দেশের এই ৫০ তম প্রধান বিচারপতির নাম ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud)। পেশাগত ভাবে তাঁর  বাবাও ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তিনি ছিলেন এদেশের ১৬ তম প্রধান বিচারপতি।

তবে ট্র্যাজেডিতে ভরপুর চন্দ্রচূড়ের (DY Chandrachud) ব্যক্তিগত জীবন হার মানাবে সিনেমার গল্পকেও।একটা সময় তাঁর জীবনে এসেছে নানান চড়াই-উৎরাই। ক্যান্সার কেড়ে নিয়েছে চন্দ্রচূড়ের প্রথম স্ত্রী রশ্মিকে। অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি তাঁকে। ২০০৭ সালে তিনি মারা যান। তাঁদের দুই ছেলে অভিনব এবং চিন্তন। তাঁরাও পেশায় আইনজীবী। তাঁদের মধ্যে অভিনব রয়েছেন বম্বে হাইকোর্টে আর চিন্তান বিদেশে থাকেন।

প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ২০০৮ সালে ৪৯ বছর বয়সে এসে দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন চন্দ্রচূড়। দ্বিতীয় স্ত্রী কল্পনা দাস-ও আইনের পেশায় রয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে কল্পনা প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে বিচারপতি জানিয়েছিলেন কল্পনা এবং তিনি পরস্পরের ভালো বন্ধু। কল্পনার সামাজিক মূল্যবোধ তাঁর মধ্যে নাকি অনেক পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

তাঁরা দুজনে বিশেষভাবে সক্ষম দুই কন্যা সন্তান প্রিয়াঙ্কা এবং মাহিকে দত্তক নিয়েছিলেন। আদালতে বিচারপতি আসনে বসা কালীন সময়ে একাধিক কঠোর আদেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।  কিন্তু বিচারপতি হিসেবে তিনি যতই কঠোর হোন না কেন মন থেকে একজন বাবা তো? তাই সন্তানদের কষ্টে তাঁর মনটাও দুমড়ে-মুচড়ে ওঠে।

আরও পড়ুন: ভোটের মুখে বিপাকে সিতাইয়ের তৃণমূল প্রার্থী! জনস্বার্থ মামলায় বিরাট রায় দিল হাইকোর্ট

তাই বিশেষভাবে সক্ষম মেয়েদের জীবনের কষ্টের কথা বলতে গিয়েও গলা কেঁপে উঠেছিল প্রধান বিচারপতির। মেয়েদের নিয়ে সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, ‘২০১৪ সালে উত্তরাখণ্ডে ওদের জন্ম। ওরা নিমোলিয়ান মায়োপ্যাথি নামের একটি জেনেটিক রোগে আক্রান্ত। জন্মের সময়ই দেখা দেয় সমস্যাটা। তখন দেশে এই রোগ পরীক্ষা করার কোনও ব্যবস্থা ছিল না।’

DY Chandrachud

তারপরেই তাঁর সংযোজন ‘অ্যানাস্থেশিয়া ছাড়াই ওদের শরীর কেটে টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। লখনউতে পরীক্ষাটি করা হয়। খুবই যন্ত্রণাদায়ক ছিল। ভাষায় বলে বোঝাতে পারব না। প্রথমে বড় জনের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা হয়। তারপর ছোটজনের। অত যন্ত্রণার মধ্যেও আমাদের বড় মেয়ে, ওই অতটুকু বয়সে, দিদি হিসেবে আমাদের বলেছিল, বড্ড ব্যথা, এই পরীক্ষা যেন ওর বোনের উপর না করা হয়।’ শুধু তাই নয় প্রধান বিচারপতির দুই মেয়ে বিশেষ ভাবে সক্ষম হলেও ছোট থেকেই ওদের পড়াশোনার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ ছিল। তবে বাচ্চাদের পড়াশোনা করানোর জন্য স্কুল খুঁজেতেও একাধিক ঝামেলার মুখে পড়তে হয়েছিল বিচারপতিকে।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর