বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত দু’বছর ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। যার জেরে রীতিমতো কঙ্কালসার দশা রাজ্যের। এখনও জট খোলেনি বহু সমস্যার। এরই মাঝে এক শিক্ষকের (Teacher) করা মামলায় কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের (High Court)। পড়ুয়াহীন স্কুল থেকে বদলি চাওয়ায় এক শিক্ষককে পাড়া ঘুরে ছাত্র খোঁজার নিদান দিয়েছিলেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই)। হাইকোর্টে মামলা উঠতেই ডিআইয়ের ভূমিকায় প্রবল সমালোচনায় সরব বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha)।
ঘটনাটা কি?
জলপাইগুড়ির রানিচড়া টিজি জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা। যেখানে পড়ুয়া সংখ্যার তুলনায় শিক্ষক বেশি। প্রতিদিন গড়ে ৫–৭ জন পড়ুয়া আর স্কুলে তিন জন শিক্ষক। এমনও দিন থাকে যখন কোনো পড়ুয়াই আসে না। এদিকে শিক্ষকদের হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হয়। সবমিলিয়ে নিটফল শূন্য।
প্রায় পড়ুয়াহীন ওই স্কুল থেকে অন্যত্র বদলি হতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন শিক্ষক দীপক পাশোয়ান। তিনি আর্জি জানিয়েছিলেন যেখানে বেশি পড়ুয়া, শিক্ষকের দরকার রয়েছে এমন স্কুলে তিনি বদলি চান। কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সেই বিষয়ে মাথা না ঘামানোয় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, ডিআইকে শিক্ষকের বদলির বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
এদিকে বদলি তো দূর, পাল্টা ‘অদ্ভুত’ ফরমান জারি করেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই)। তিনি ওই শিক্ষককে এলাকায় ঘুরে ঘুরে পড়ুয়া জোগাড় করতে হবে বলে নির্দেশ দেন। এরপর আদালত অবমাননার মামলা হয়। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে সেই মামলা ওঠে। সেখানেই শুনানি চলাকালীন ডিআইয়ের ‘নির্দেশিকা’ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। ক্ষোভে ফেটে পড়েন জাস্টিস সিনহা।
এদিন মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জোর সওয়াল করেন। তিনিই বলেন, শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, স্কুলে পড়ুয়া–শিক্ষক অনুপাত ৩০:১ থাকার কথা। এদিকে সেই অনুপাতের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষক রয়েছেন ওই স্কুলে। তারপরও ডিআই পড়ুয়া খুঁজে আনার ‘নিদান’ দিয়েছেন।
সব শুনে বিচারপতি সিনহা বলেন, একজন ডিআই কোনও ভাবেই এমন নির্দেশ দিতে পারেন না। বিচারপতির প্রশ্ন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে পড়ুয়া ধরে আনা কি শিক্ষকের কাজ? ডিআই নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরই ডিআইয়ের দেওয়া নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: অপেক্ষার অবসান! বাড়ল DA, কত শতাংশ? অবশেষে বড় ঘোষণা সরকারের
পাশাপাশি শিক্ষকের বদলির আবেদন কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশনকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (High Court)। আগামী দু’মাসের মধ্যে আবেদন বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ। আগামী ১৬ জানুয়ারি রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে।