মিলছে ৩০০-৫০০ টাকা! ৩৬ লক্ষ মানুষের পেনশন নিয়ে সামনে বড় খবর

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পৃথিবীর অনেক দেশেই প্রবীণ নাগরিকদের জন্য চালু রয়েছে একাধিক সরকারি প্রকল্প। ব্যতিক্রম নয় ভারত সরকারও। বিশেষ করে অবসর কালে প্রবীণদের মাসিক খরচের কথা চিন্তা করেই সরকারি কর্মচারীদের জন্য অবসরকালীন ভাতা বা পেনশন (Pension) চালু করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। পরবর্তীকালে সুরক্ষার পরিধি বাড়িয়েই চালু করা হয় ‘ফ্যামিলি পেনশন’ (Pension)। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের পারিবারিক ও সামাজিক হেনস্থা থেকে রক্ষার জন্য চালু করা হয়েছে বেশ কিছু আইনও। এবার এই বহু জনপ্রিয় সরকারি প্রকল্প নিয়েই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে উঠল বঞ্চনার অভিযোগ।

প্রবীণদের পেনশন (Pension) নিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ

‘মোদীর গ্যারান্টি’র নামেই ‘টুপি পরানো’ হচ্ছে প্রবীণদের। খাতায়-কলমে পিএফ গ্রাহকদের ন্যূনতম পেনশন (Pension) পাওয়ার কথা এক হাজার টাকা। সত্যিই কি এই পরিমাণ টাকা পাচ্ছেন তাঁরা? এখানেই রয়েছে বিস্তর গোলমাল। জানা যাচ্ছে, ‘গ্যারান্টি’র নাম এক একজন হাতে পাচ্ছেন মাত্র ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। প্রশ্ন উঠছে নামমাত্র পেনশন (Pension) দিয়ে তাহলে কি ‘গ্যারান্টি’র নামে ধাপ্পাবাজি চলছে?

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে খোদ পিএফ দপ্তরই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অছি পরিষদের বৈঠকে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের আর্থিক রিপোর্ট পেশ করেছে।এই রিপোর্ট বলছে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত পিএফের আওতায়  সাড়ে ৭৮ লক্ষেরও বেশি মানুষ পেনশন পেয়েছেন ঠিকই, তবে আর তাঁদের মধ্যে ৩৬ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ হাজার টাকার কম পেনশন পেয়েছেন।

এখানেই শেষ নয় জানা যাচ্ছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের তুলনায় এক হাজার টাকার নীচের পেনশনভোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। অধিকাংশ প্রবীণ নাগরিকদের দাবি তাদের মাসিক পেনশন ঘোরাফেরা করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ পেনশনভোগীদের একটা বড় অংশকে নাম মাত্রই পেনশন দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার।

অথচ একসময় মনমোহন সিংয়ের  আমলে এই প্রবীণ নাগরিকদের পেনশন বাড়ানোর দাবি তুলেছিল বিজেপি। ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রবীণদের ন্যূনতম পেনশন এক হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেছিল ইউপিএ সরকার। তখন বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভরেকর দাবি করেছিলেন, হাজার টাকা পেনশনের নামে ভিক্ষা দিচ্ছে কেন্দ্র। ওই টাকায় কেউ বাঁচতে পারে না। কিন্তু তাঁরা ক্ষমতায় এলে নাকি তিন হাজার টাকা পেনশন দেবেন।

আরও পড়ুন: ‘ব্ল্যাকমেইল করে..,’ পদ হারিয়ে এবার যা বললেন শান্তনু সেন, জোর শোরগোল

তবে কোথায় গেল সেই ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি? তবে কি কথা দেওয়াই সার ছিল? কাজের কাজ করেনি কিছুই! একইসাথে প্রশ্ন উঠছে কেন এই বঞ্চনা? এপ্রসঙ্গে পিএফ দপ্তর যে কারণ গুলির কথা বলছে তার মধ্যে অন্যতম কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ। বলা হচ্ছে ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি না করলে ন্যূনতম পেনশন দেওয়া হবে না। এছাড়া নূন্যতম  ১০ বছর চাকরি করলে তবেই  মিলবে ন্যূনতম পেনশন।

Pension

যদিও এই যুক্তি অতটাও গ্রহণযোগ্য নয় বলেই দাবি করা হচ্ছে। তবে জানা যাচ্ছে, যাঁরা এই শর্ত পূরণ করতে পারেননি, সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অন্তত ৯০ শতাংশ সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই তার দায় কেন নেবেন সরকারি কর্মচারীরা? তবে কি নিজেদের দোষ ঢাকতেই এমন অজুহাত দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার? এতদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হয়েছিল বাংলা। তাহলে কি সেই অভিযোগই সত্যি?

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর