বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কয়েকদিন ধরেই শিরোনামে রয়েছে ওয়াকফ বিল (Waqf Bill)। ইতিমধ্যেই এর বিরুদ্ধে দিকে দিকে প্রতিবাদের সুর উঠতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার কলকাতার রানি রাসমণি লেনে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীর ডাকে এর বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), কাজল শেখ সহ আরও অনেকে। সেই মঞ্চেই প্রথমের সারিতে বসে ছিলেন চারজন সাধু-সন্ত। যা স্বাভাবিকভাবেই নজর কাড়ে সকলের। চমকপ্রদভাবে তাঁদের প্রশ্ন করতেই জানা গেল, কী কারণে এই সভা ডাকা হয়েছে সেটাই তাঁদের অজানা! বাংলা হান্টের প্রশ্নে কার্যত ভ্যাবাচ্যাকা খেতে দেখা যায় তাঁদের।
এদিন এই সভায় বেশ কিছুক্ষণ ভাষণ দেন ফিরহাদ হাকিম। সেই সময় মঞ্চে বসে তাঁর বক্তব্য শুনছিলেন চারজন সাধু-সন্ত। জানা যাচ্ছে, ফিরহাদের মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদও করেছেন তাঁরা। অথচ বাংলা হান্টের তরফ থেকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদ করতে কেন এসেছেন? উত্তর আসে, ‘প্রধানবাবু আমাদের ডেকে নিয়ে এসেছেন। আমাদের বলা হয়, মিটিং হচ্ছে সেখানে যাব’।
ওই সাধু-সন্ত জানান, তাঁরা তারকেশ্বর থেকে এসেছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, নিজের মন থেকে এই মিটিংয়ে আসেননি? উত্তর আসে, ‘না। আমরা জানলে তো আসব! শহরে কোথায় কোন মিটিং হচ্ছে সেটা আমরা কীভাবে জানব?’ কীসের জন্য আজকের সভার আয়োজন করা হয়েছে সেটা জানেন কিনা জিজ্ঞেস করাতেও ঠিকভাবে উত্তর দিতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুনঃ ‘সব ধর্মকে মন থেকে সম্মান করি, কিন্তু…’! সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন ফিরহাদ
‘প্রধান’ বলে এক ব্যক্তি তাঁদের এই সভায় ডেকে এনেছেন বলে জানিয়েছেন সভায় উপস্থিত আরও এক সাধু-সন্ত। তিনি বলেন, ‘আমাদের বলা হয়, চলুন একটু দেখা-শোনা যাক। আমরা দেখতে শুনতে এসেছি’। এরপর ওয়াকফ বিল (Waqf Bill) সম্বন্ধে জানেন কিনা জিজ্ঞেস করায় প্রথম খানিক চমকে ওঠা প্রতিক্রিয়া দেন তিনি। এরপর শুধু ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ’ বলে সম্মতি জানান তিনি।
এদিকে বাংলা হান্টের (Bangla Hunt) তরফ থেকে ঝাঁঝালো সওয়াল করা হতেই ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠেন ওই সাধু-সন্তদের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি। সুর চড়িয়ে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘বিরক্ত করছেন কেন?’ সাধু-সন্তরা আজকের সভার বিষয়ে জানেন না বলায় পাল্টা ওই ব্যক্তি বলেন, ‘কে বলছে জানে না? আপনি ওর মুখে চাপিয়ে দিচ্ছেন? ও তো জানে বলছে। আমরা সম্প্রীতির বার্তা দিতে এসেছি’।
তাঁদের সঙ্গে থাকা আরেক ব্যক্তি এরপর আমাদের সাংবাদিকের কাছে বলেন, ‘আমাদের বাংলায় হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সবাই এক। এটাই আসল উদ্দেশ্য। এছাড়া অন্য কোনও ব্যাপার নেই’। সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার জন্যই সাধু-সন্তদের আজ ওয়াকফ বিলের (Waqf Bill) বিরুদ্ধে ডাকা এই প্রতিবাদ সভায় নিয়ে আসা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। তবে যা ‘কাণ্ড’ ঘটেছে তার সবটাই ধরা পড়েছে আমাদের ক্যামেরায়।