বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ঘটনা নিয়ে বর্তমানে সরগরম বাংলা। শিক্ষামন্ত্রীকে হেনস্থা, তাঁর গাড়িতে এক ছাত্রকে ‘পিষে’ দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই এই জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি। এবার এই ঘটনাতেই উচ্চ আদালতের তোপের মুখে পড়ল পুলিশ (Police)। ফের তাঁদের ভূমিকা নিয়ে উঠল প্রশ্ন।
শিক্ষামন্ত্রীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ পুলিশ! পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)
এদিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। সেই সময়ই শিক্ষামন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাস্টিস ঘোষ। শুনানি চলাকালীন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাতেও জড়িয়ে পড়েন তিনি।
গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলন ছিল। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। সেখানে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। মন্ত্রীর গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অল্পবিস্তর চোটও পান ব্রাত্য। যাদবপুর থেকে বেরিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা হয় মন্ত্রীর।
আরও পড়ুনঃ যাদবপুর কাণ্ডে ‘অ্যাকশনে’ রাজ্যপাল! ডাকা হল বিশেষ বৈঠক! অসুস্থ উপাচার্য থাকবেন?
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি ঘোষ। স্পষ্ট বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে তিনি যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। জাস্টিস ঘোষ প্রশ্ন করেন, ‘আমি জানতে চাইব যে মন্ত্রীর সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা কতজন পুলিশ আধিকারিক আহত হয়েছেন?’ ব্রাত্যর নিরাপত্তায় ‘গুরুতর গাফিলতি’ হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ বিচারপতির।
এদিকে প্রবীণ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারপতি ঘোষকে (Justice Tirthankar Ghosh) বলেন, সর্বত্র ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কোনও রাজনৈতিক সভা কিংবা দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে যান না বলে দাবি করেন তিনি। তাঁদের কথার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে আইনজীবীদের বৈঠকেও তিনি নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে যেতে পারেন না বলে জানান।
একইরকমভাবে গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নিরাপত্তারক্ষী না নিয়ে যাওয়াকে স্বাভাবিক বলেই দাবি করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও প্রবীণ আইনজীবীর এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘আমি ফের বলছি, মন্ত্রীর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুতর গাফিলতি হয়েছে। এরকম যদি হতো যে অনেক লোক এসে মন্ত্রীর ওপর হামলা করেছে, নিরাপত্তা আধিকারিকের সংখ্যা অপ্রতুল এবং নিরাপত্তা আধিকারিকরা আহত হওয়ার পর মন্ত্রী আহত হয়েছেন, তাহলে সেটা অন্য ব্যাপার। তবে এখানে সেটা হয়নি। সাংবিধানিক পদাধিকারীরা যদি একবার পদ গ্রহণ করেন, তাহলে তো তাঁকে প্রোটোকল মানতেই হবে’।