বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এখন থেকেই বাংলা জুড়ে ঘটনার ঘনঘটা। একের পর এক ইস্যুতে ইতিমধ্যেই উত্তেজনার পারদ চড়ছে বঙ্গ রাজনীতির। কিছুদিন আগেই বারুইপুরে সভা করতে গিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কালো পতাকা দেখিয়ে তাঁর গাড়ি আটকে দেওয়া থেকে শুরু করে তৈরী হয় ব্যাপক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। কিন্তু তাতে তো ‘দমবার পাত্র’ নন শুভেন্দু। তাই তাঁকে সভা করতে বাধা দেওয়া হলে অনুমতি চাইতে আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) অনুমতি নিয়ে ইতিমধ্যেই বারুইপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এই বিজেপি (BJP) নেতা। এরইমধ্যে এবার আদালতে বিজেপির আনা ভিডিও ফুটেজ দেখে বিরাট নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
বিজেপির ফুটেজ দেখে বড় নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)
প্রসঙ্গত আদালতের (Calcutta High Court) অনুমতিতে শুভেন্দু বৃহস্পতিবার বারুইপুরে বিক্ষোভ করার অনুমতি পেলেও আগে যেদিন তাঁর সভা করার কথা ছিল অর্থাৎ ১৯মার্চ ওই একই দিনে ১০০ মিটারের মধ্যে একই সময়ে একই জায়গায় মিছিল বের করতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকেও। শাসক-বিরোধী উভয় শিবিরের ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগানে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল গোটা এলাকায়। একই দিনে দুই দল মিছিল করার অনুমতি পেল কিভাবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে এদিন। এমনকি এই প্রশ্ন ওঠে আদালতেও।
কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসের এই মামলার শুনানি শুরু হলে তিনি রাজ্যের কাছে জানতে চান শুভেন্দু অধিকারী কে কারা কালো পতাকা দেখিয়েছিল? পাল্টা জবাবে রাজ্য কয়েকজনের কথা বললে বিচারপতি জানতে চান,’তাঁরা কী অনুমতি নিয়েছিল?’ উত্তরে রাজ্যের তরফে বলা হয় ওখানে তৃণমূলেরও একটি কর্মসূচি ছিল। এরপর রাজ্যের যুক্তি শুনে রীতিমতো অবাক হন জাস্টিস ঘোষ। তিনি এরপর পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা সব কিছু জেনে কি করে দুটি দলকে অনুমতি দিলেন?’
বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়েও রাজ্যের তরফে এদিন অকপটে বলা হয়,’কেউ অনুমতি চাইলে তো দিতেই হবে।’একইসাথে আইনজীবীর যুক্তি ছিল, ‘কোনও নেতা কোথাও গেলে যদি বিরোধীরা কালো পতাকা দেখান তাহলে সম্ভবত এটা বলা যায় না যে তাঁরা কোনও অপরাধ করেছেন।’ তখনই বিচারপতি বলে ওঠেন, ‘সেটা অন্য কথা! কিন্তু এখানে আইনি অনুমতি দেওয়ার কারণে তো এই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘কুকুরের ল্যাজ সোজা হয় না’, অক্সফোর্ডে মমতার ভাষণে বিশৃঙ্খলা করলেন কারা? ছবি দিয়ে চেনালেন অরূপ
রাজ্যের আইনজীবী এদিন পাল্টা নিজের পর্যবেক্ষণের কথা তুলে বললেন, ‘অনুমতি দিলেও দোষ, না দিলেও দোষ!’ একইসাথে তিনি জানান, ‘এটা একটা পুরানো রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিছিল করার পরে একটা অস্পষ্ট অভিযোগ করা। এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয়’। সওয়াল জবাবের মধ্যে বিজেপির আইনজীবীরা পাল্টা রাজ্যের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, অ্যাডভোকেট জেনারেল কী রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছেন নাকি অভিযুক্তদের হয়ে? এরপর এদিন জাস্টিস ঘোষ, আদালতে বিজেপির দেওয়া ফুটেজ দেখতে চান।
ভরা এজলাসে এদিন সেই ফুটেজ দেখে জাস্টিস ঘোষ বলে দেন, ‘এই ফুটেজে কিছুই দেখা যাচ্ছে না’। এদিন তিনি স্পষ্ট জানান তিনবার দেখেও নাকি কিছু বুঝতে পারছেন না। তিনি এদিন পরিষ্কার জানিয়েছেন, ‘ভাল কোনও ফুটেজ থাকলে দেখান।’ এছাড়াও বিজেপির আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা যেগুলোকে বাঁশের লাঠি বলছেন আমার সেগুলোকে দেখে ফাইবার স্টিক মনে হচ্ছে। এই ফুটেজে দেখে মনে হচ্ছে পুলিশ আপনাদের বাঁচাবার চেষ্টা করছে। পরিষ্কার ফুটেজ থাকলে নিয়ে আসুন যেটাতে হামলার ছবি স্পষ্ট হয়।’