বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় আছে, “ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়”। আর এই আপ্তবাক্যকে ফের একবার প্রমাণ করে দেখালেন এক বৃদ্ধা। যিনি বয়সের বাধাকে উপেক্ষা করেই তৈরি করেছেন এক বিরল নজির। যা জানার পর চমকে উঠছেন সকলেই। মূলত, এই প্রতিবেদনে আজ আমরা তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) কমলকান্নির সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো। যিনি বয়সের দিক থেকে ইতিমধ্যেই ১০০-র গন্ডি পেরিয়ে গিয়েছেন। এমতাবস্থায়, ১০৮ বছর বয়সে সরকারি পরীক্ষায় ১০০-র মধ্যে ৯৭ পেয়ে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
শুধু তাই নয়, তাঁর এই কৃতিত্বে স্তম্ভিত হয়েছেন সকলেই। পাশাপাশি, তিনি সবার কাছে হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণার উৎসও। এদিকে, কমলকান্নির এই অনবদ্য কৃতিত্বে খুশি হয়েছেন সরকারি আধিকারিকরাও। বয়সের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে তিনি যেভাবে এই বয়সেই পড়াশোনা করে পরীক্ষায় সফল হয়েছেন তা দেখে অবাক হয়েছেন তাঁরা। এই কারণে সরকারের তরফে ওই বৃদ্ধা পেয়েছেন বিশেষ সম্মানও।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, একদম ছোটবেলাতেই পরিবারের সঙ্গে পাশের রাজ্য কেরলে চলে যেতে হয় কমলকান্নিকে। অভাবের সংসারে ছোট থেকেই করতে হত চাষের কাজ। যার ফলে মাত্র দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্তই সুযোগ ঘটেছিল পড়াশোনার। তবে, পড়াশোনার জন্য প্রবল আগ্রহ ছিল তাঁর। কিন্তু, ছিল না কোনো সুযোগ। তারপরে কমলকান্নির জীবনে কেটে গিয়েছে বহু বছর। তবে, পড়াশোনার প্রতি সেই টান থেকে গিয়েছিল তাঁর মধ্যে।
উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশে শিক্ষার দিক থেকে অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে কেরল। সেখানে শিক্ষার হার প্রায় ৯৬ শতাংশ। এদিকে, এই হারকে আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে সম্প্রতি কেরল সরকার একটি নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মূলত, ওই কর্মসূচিতে রাজ্যের নিরক্ষর প্রবীণদের স্বাক্ষর করে তোলার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হয় সরকার। আর এই “সুবর্ণ সুযোগ”-কেই কাজে লাগান কমলকান্নি।
ওই সরকারি প্রকল্পে তাঁর নাম নথিভুক্ত করার পর প্রকল্পের শেষে মূল্যায়নের সময় দেখা যায় তিনি ১০০-র মধ্যে ৯৭ নম্বর পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর সঙ্গে আরও যাঁরা সেই পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁদের কেউই কমলকান্নির প্রাপ্ত নাম্বারের ধারে কাছে আসতে পারেন নি। এদিকে, স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই দুর্দান্ত সাফল্যে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও বেজায় আনন্দ পান। এই প্রসঙ্গে ওই বৃদ্ধার দুই নাতি জানিয়েছেন, তাঁদের ঠাকুমা পড়াশোনা করতে ভালোবাসতেন। পাশাপাশি, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও পড়াশোনা করার প্রতি উৎসাহ দিতেন তিনি। অবশেষে তাঁর এই সাফল্য রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে সর্বত্র।