বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র গরমের প্রভাব শুধুমাত্র যে আমাদের দেশে পরিলক্ষিত হচ্ছে এমনটা কিন্তু নয়। বরং, বিশ্বের একাধিক দেশে অনুভূত হচ্ছে গরমের দাপট। সেই রেশ বজায় রেখেই অসহনীয় গরমের প্রভাব দেখা গিয়েছে ফিলিপিন্সেও (Philippines)। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল সেখানে গরমের দাপট এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে সেখানকার বাঁধগুলিও শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে।
ফিলিপিন্সের একটি বড় বাঁধ শুকিয়ে যাওয়ায় ৩০০ বছরের পুরনো শহর আবারও উঠে এসেছে। ন্যাশনাল ইরিগেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পর্যবেক্ষক ইঞ্জিনিয়ার মারলন প্যালাদিন জানিয়েছেন যে, কয়েক মাস ধরে বৃষ্টি হচ্ছে না। এই কারণে গত মার্চ মাসে নুয়েভা ইসিজা প্রদেশের পেন্টাবঙ্গন বাঁধের জল শুকিয়ে যেতে শুরু করে। যার ফলে শহরটির একটি গির্জা, একটি সমাধি এবং একটি টাউন হল সহ প্রধান কাঠামোগুলি এখন দৃশ্যমান হয়েছে।
জানা গিয়েছে যে, ওই শহরের নাম পেন্টাবঙ্গন। ১৯৭০-এর দশকে বাঁধটি নির্মিত হলে জলাধারের কারণে সেটি জলে নিচে চলে যায়। কিন্তু বর্তমানে ওই দেশের প্রায় অর্ধেকই খরার কবলে পড়েছে। এই কারণে বাঁধের জলস্তরও নেমে গেছে। ফিলিপিন্স সরকারের আবহাওয়া বিভাগ PAGASA থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিলের জলস্তরের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৫০ মিটার কম ছিল। পালাদিন আরও বলেন, “বাঁধ নির্মাণের পর ষষ্ঠবারের মতো শহরটি আবার দৃশ্যমান হয়েছে। তবে এবারে এটি দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ সময়ের জন্য।”
আরও পড়ুন: এখনই হন সতর্ক! এই ভুল করলেই সিম সহ সরাসরি ব্লক হয়ে যাবে ফোন, বড় পদক্ষেপ TRAI-এর
প্রচণ্ড গরমে স্কুল-অফিস বন্ধ: মূলত, যখনই জলের স্তর নিচে নেমে যায় তখনই এই জনশূন্য জনপদ হয়ে ওঠে পর্যটন স্পট। উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ অংশের মতো ফিলিপিন্সেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। সেখানকার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। এই কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ইতিমধ্যেই স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জনসাধারণকে বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, PAGASA-র আবহাওয়াবিদ বেনিসন ইস্তারেজা জানিয়েছেন, আগামী দিনে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। মূলত, এল-নিনোর কারণে পরিস্থিতি অত্যন্ত বেগতিক হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনা সরানোর আগেই নয়া দিল্লিতে মলদ্বীপের বিদেশ মন্ত্রী, ঘুরে যাবে খেলা? জোর জল্পনা
পড়েছে অত্যন্ত গরম: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এপ্রিল এবং মে মাসে সাধারণত ফিলিপিন্সে গরম থাকে। পাশাপাশি, এই সময়ে সেখানকার গড় তাপমাত্রা ৩০-এর ওপরে থাকে। PAGASA-র তথ্য অনুযায়ী, বিগত কিছুদিনে কয়েকটি এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। এদিকে, প্রচণ্ড গরমে ফিলিপিন্স ছাড়াও বিশ্বের আরও একাধিক দেশে বন্ধ হয়েছে স্কুল। বাংলাদেশেও স্কুল বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও, থাইল্যান্ডে গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত হিটস্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। থাইল্যান্ড জানিয়েছে, ২০২৩ সালে তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি। এদিকে, মায়ানমারের সীমান্ত এলাকায় তা ৪৫ ডিগ্রির ওপরে পৌঁছেছে।