এবার পাওয়া গেল ভুঁয়ো ভিখারি! টাকা জমানোর নেশায় সারাদিন ভিক্ষাবৃত্তি করেন ৬০ হাজার বেতনের সরকারি কর্মী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শার্লক হোমস সিরিজের ‘ম্যান উইথ দ্য টুইস্টেড লিপস’ গল্পের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। সেখানে গল্পের প্রধান চরিত্র বাড়ি থেকে সুট বুট পড়ে বেরোনোর পর রাস্তায় বসে বহু টাকা উপার্জন করতেন ভিক্ষা করে। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্য পাকাপোক্ত অ্যালিবাই ছিল তার। এমন ঘটনা আরও দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের একাধিক সিনেমাতেও, কিন্তু এবার যে ঘটনা সামনে এলো নিশ্চিত ভাবেই হার মানাতে পারে যেকোনও নামকরা লেখোকের স্ক্রিপ্টকেও। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ায়।

বাঁকুড়া স্টেশন চত্বর থেকে এক ভিক্ষুককে উদ্ধার করার পর এমন ঘটনা সামনে এসেছে রীতিমতো চমকে দিয়েছে সকলকেই। শুক্রবার গভীর রাতে স্টেশনে বসে থাকতে দেখে বছর-পঞ্চাশের ওই ভিক্ষুককে উদ্ধার করে বাঁকুড়া পুরসভার ভবঘুরেদের রাত্রি-নিবাস পরিচালনকারী সংস্থার কর্মীরা। প্রাথমিকভাবে সংস্থার কাছে ভিক্ষাজীবী হিসেবেই নাম লেখান ওই ব্যক্তি। কিন্তু রবিবার হঠাৎই সেখান থেকে বেরোনোর জন্য জোরাজুরি শুরু করেন ওই ভিক্ষুক। স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ হয় সংস্থার কর্মীদের।

   

খাওয়া-দাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তি চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন কেন? জেরার মুখে অবশেষে জানা যায়, আসলে তিনি ভিক্ষাজীবী নন। আসলে তিনি একজন স্বাস্থ্যকর্মী, টাকা জমানোর জন্য ভিক্ষা করাটাই নাকি তার নেশা। আর এখন তিনি যেতে চান হাসপাতালে ডিউটি জয়েন করতে। ঘটনা শুনে রীতিমত অবাক হয়ে যান ভবঘুরেদের রাত্রি-নিবাস পরিচালনকারী সংস্থার কর্মীরা। সংবাদমাধ্যমকে তারা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির মাসিক মাইনে প্রায় ৬০ হাজার টাকারও বেশি।

গোটা ঘটনাটাই পুলিশকে জানান তারা। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, পরিবারকেও দেখেন না ওই ব্যক্তি। শুধু একটাই নেশা টাকা জমানো। এমনকি কেউ জিজ্ঞেস করলে বলেন, “চাকরি করলে ভিক্ষা করা যাবে না, এমন নিয়ম আছে না কি?” তার স্ত্রী জানান, ‘‘বিয়ের পরেই জানতে পারি, টাকা জমানোর নেশাতেই চাকরির বাইরেও ভিক্ষা করেন স্বামী। শুনেছি, দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। একটিতে বছর চারেক আগে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা ছিল বলে মনে পড়ে। এখন হয়তো কোটি টাকা হয়ে গিয়েছে। তবে উনি আমাকে কানাকড়িও দেন না। বাপের বাড়ির আর্থিক সাহায্যে কোনও মতে একমাত্র মেয়েকে মানুষ করছি।”

ঘটনায় ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে হাসপাতাল তরফে। এলাকার মহকুমা শাসক সুশান্তকুমার ভক্ত বলেন, “শীঘ্রই ওই ব্যক্তির মানসিক অবস্থা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলব।

Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর